ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, স্বৈরাচর নিপাত যাক বলে স্বৈরতন্ত্রকে জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। তিনি বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের প্রধান হিসেবে সাংবিধানিক ভাবেই অনেক ক্ষমতা ব্যবহার করেছেন। কিন্তু ৯১ সালের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে সংসদীয় এক নায়কতন্ত্র বা স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছে। এতে ক্ষমতা নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পড়েছে, সরকারের জবাবদিহিতার অভাবে দেশে লুটপাট ও দুর্নীতি বেড়ে গেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। তিনি বলেন, জবাবদিহিতার অভাবে দুর্নীতি এতটাই বেড়েছে যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শাসনামলে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে ৫বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
শনিবার বিকেলে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইল চত্বরে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু তাহের মুকু ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সাবেক সহসভাপতি মীর আজগর আলী স্মরণে এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের এ কথা বলেন।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, ৯ জানুয়ারি হচ্ছে জাতির জন্য একটি বিশেষ দিন। এই দিনে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেছিলেন। তিনি বলেন, ৯০ সালে তিন জোটের রুপরেখা অনুযায়ী পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা হস্থান্তর করেছিলেন। কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রতি অবিচার করেছিলো তৎকালীর তত্বাবধায়ক সরকার। পল্লীবন্ধুকে অন্যায় ভাবে আটক করে, তাকে নির্বাচন করতে দিতে চায়নি। জনগনের চাপে পল্লীবন্ধুকে নির্বাচন করতে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। পল্লীবন্ধু ও জাতীয় পার্টির সকল নেতা-কর্মীদের আটক করে নির্বাচনের মাঠে থাকতে দেয়নি। কিন্তু জেল থেকে নির্বাচন করেও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২ বার ৫টি করে আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পল্লীবন্ধু প্রতিটি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন, কোন নির্বাচনে পরাজয়ের রেকর্ড নেই তার। নানা অপবাদ দিয়েও পল্লীবন্ধু এরশাদ ও জাতীয় পার্টিকে জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায়নি। পল্লীবন্ধু কোন সমাবেশে উপস্থিত হলে সেখানে জনতার ঢল নেমেছে। পল্লীবন্ধুর মৃত্যুর পরে প্রতিটি জানাজায় লাখো মানুষের ঢল প্রমান করে তিনি ছিলেন গণমানুষের নেতা, তিনি ছিলেন জননন্দিত নেতা। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর স্বপ্নের দুর্নীতি, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে জাতীয় পার্টি রাজনীতি করছেন।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে এবং জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর উপদেষ্টা এবং মহানগর দক্ষিণ এর সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম রুবেল এর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।
এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, দেশে লজ্জাজনক ভাবে ধর্ষণ বেড়ে গেছে। ধর্ষণ এতটাই বেড়েছে তাতে মনে হয়না আমরা সভ্য সমাজে বাস করছি, ধর্ষণ গণতান্ত্রিক সমাজে বেমানান। তিনি বলেন আমাদের মা-বোন অফিস আদালত বা মার্কেটে যাবে তার নিরাপত্তা নেই। আমাদের মেয়েরা স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে তার নিরাপত্তা নেই। তাই দেশের মানুষকে ধর্ষণ, অন্যায়, অবিচার ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে আহবান জানান জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।
তিনি বলেন, দেশে আজ বাক স্বাধীনতা নেই, সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা নেই। খুন, গুম, ধর্ষণ, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়তে জাতীয় পার্টির পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান তিনি।
পরে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং জাতীয় ওলামা পার্টির সভাপতি ক্বারী হাবিবুল্লাহ বেলালী দেশের শান্তি, সম্বৃদ্ধি ও প্রয়াতদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মুনাজাত করেন।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, এসএম ফয়সল চিশতী, মীর আবদুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, মোঃ রেজাউল ইসলাম ভুইয়া।