ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: সাময়িক বরখাস্ত সিলেটের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) পার্থ গোপাল বণিকের একটি রিভিশন মামলা উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতির মামলায় বিচারিক আদালতে অব্যাহতি চেয়ে আনা আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে রিভিশন মামলা দায়ের করেছিলেন পার্থ গোপাল বণিক।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীম সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ রিভিশন মামলাটি খারিজ করে এ আদেশ দেন।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, রিভিশন মামলাটি এবং একই সঙ্গে তার জামিনের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু।
রাজধানীর নর্থ রোডের (ভূতের গলি) ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের প্রেক্ষিতে দুর্নীতির মামলায় পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে গত বছরের ৪ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালত। একই দিন পার্থ গোপাল বণিকের অব্যাহতি চেয়ে আনা আবেদনও খারিজ করে দেন ওই আদালত। সেই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন মামলা করেন পার্থ গোপাল বণিক।
গত বছরের ২৪ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন ডিআইজি প্রিজন পার্থের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে মোট ১৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
অভিযোগ পত্রে বলা হয়, পার্থ গোপালের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৮০ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। অর্থাৎ তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনকালে ৮০ লাখ টাকা বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপার্জন করে পাচারের উদ্দেশ্যে নিজ বাসায় লুকিয়ে রেখেছেন মর্মে প্রমাণিত হয়। আরও বলা হয়, ২০১৪ সালে তিনি ৩১ হাজার ২৫০ টাকা বেতন স্কেলে কারা উপ-মহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তার এ বেতন স্কেলের সঙ্গে এতো টাকা অর্থ উপার্জন অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি তার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তা উত্তোলন করেননি বা তিনি কখনও এ অর্থ আয়কর বিবরণীতেও প্রদর্শন করেননি। যা বিদ্যমান আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
২০১৯ সালের ২৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুদকের সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুফের নেতৃত্বে পার্থ গোপাল বণিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ঘুষ ও দুর্নীতির কয়েক লাখ নগদ টাকা তার বাসায় রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে এদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পার্থ গোপাল বণিকের বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয় এবং তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। একই সালের ৩০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পার্থ গোপাল বণিককে গ্রেফতারের দিন থেকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।