ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর সময় থেকে সকল দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতির সাথে সাথে কাগজের দামও গাণিতিক হারে বেড়েই চলছে। দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের কাগজের চাহিদা মেটাতে অগণিত হারে গাছ কাটা হচ্ছে। ফলস্বরূপ দেশের বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে। সেসব কথা চিন্তা করে কচুরিপানা থেকে কাগজ তৈরী করেছে বুটেক্সের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চার শিক্ষার্থীর একটি দল।
দলের চার শিক্ষার্থী হলেন ইজাজ মাহমুদ, তাশকীন উদ্দীন রাকিব, ফাইজুল ইসলাম, আফতাব উদ্দিন। প্রত্যেকেই বুটেক্সের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত।
তাদের তৈরীকৃত কাগজের বিশেষত্ব হচ্ছে শতভাগ রাসায়নিক পদার্থ মুক্ত পণ্য, শতভাগ পরিবেশ বান্ধব, ব্যবহারের পর পচনশীল। এসব কারণে এ কাগজ পরিবেশের কোনো ক্ষতিসাধন করে না। তাছাড়া এ কাগজ তৈরীতে সাধারণ কাগজের চেয়ে অনেক কম খরচ পরে। এ কাগজ দিয়ে শপিং ব্যাগ থেকে শুরু করে প্রায় সকল ধরনের প্যাকেজিং ব্যাগ তৈরী করা সম্ভব।
এ বিষয়ে তাশকীন রাকিবের সাথে কথা হলে তিনি জানান, "আমরা জানি সাধারণত কাগজ প্রস্তুত করা হয় সেলুলোজ থেকে। আর সেলুলোজ এর প্রধান উৎস হলো গাছ৷ এই সেলুলোজ সগ্রহের জন্য প্রতিনিয়তই গাছ কাটা হচ্ছে। কাগজের চাহিদা পূরনের জন্য প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৪ শতাংশ বনাঞ্চল ধ্বংস করা হয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে একটি দেশের পুরো আয়তনের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন যেখানে আমাদের দেশে বর্তমানে বনভূমির পরিমাণ ১৮ শতাংশের ও কম। যা এখন একটি আশংকাজনক পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতি থেকে বের হবার জন্য আমাদের দরকার গাছের ওপর থেকে চাপ কমানো। সেক্ষেত্রে কাগজ বানানোর জন্যে সেলুলোজ এর প্রধান উৎস হিসেবে গাছের বিকল্প হতে পারে কচুরিপানা। কচুরিপানা সেলুলোজ সমৃদ্ধ একটি জলজ উদ্ভিদ। এই উদ্ভিদে লিগনিনের পরিমান গাছের তুলনায় খুবই কম যার কারনে কাগজ তৈরিতে লিগনিন নিষ্কাশনের প্রয়োজন হয় না।
যার ফলশ্রুতিতে এই কাগজ প্রস্তুতকরণে কোনো ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়েনি। কেমিক্যাল এর ব্যবহার না থাকার কারণে একদিকে যেমন স্বল্প খরচ ও সহজ প্রক্রিয়ার এই কাগজ বানানো সম্ভব তেমনি এটি পরিবেশের ওপর ও তেমন কোনো বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে না। সুতরাং এই কাগজ সম্পুর্ণ কেমিক্যাল মুক্ত এবং পরিবেশ বান্ধব একটি পণ্য।"
তৈরীকৃত কাগজ বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদন সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "এই কাগজ প্রস্তুত করার পর এর কিছু সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করা হয়েছে। আরো পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে অবশ্যই এই সমস্যা গুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। সময় স্বল্পতার কারণে যা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। উক্ত সীমাবদ্ধতা গুলো কাটিয়ে উঠতে পারলে এই কাগজের বানিজ্যিকীকরণে আর কোনো বাধা থাকবেনা।"
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এমএফ
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com