মহাবিপদেও সৈকতে সেলফি: প্রতিমন্ত্রীকে ফোন প্রধানমন্ত্রীর
মহাবিপদ সংকেতের মধ্যেও সমুদ্রে গিয়ে মানুষের সেলফি তোলার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (১৪ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড়ের তথ্য নিয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা ইস্যুতে কক্সবাজারকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হলেও সৈকতে গিয়ে সেলফি তুলতে দেখা গেছে অনেককে। এ নিয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ফোন করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী ফোনে আমাকে বলেছিলেন, এখনো বিচে মানুষ সেলফি তুলছে, আনন্দ করছে; এটাকে তোমরা নিয়ন্ত্রণ করো।
মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা করার পরেও আমরা দেখেছি যে সমুদ্রের বিচে (সৈকত) বিভিন্ন মানুষ যাতায়াত করছে। আপনাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে তাদের নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যবস্থা ছিল না; প্রশ্নে এনামুর রহমান বলেন, ডেফিনেটলি আছে। মহাবিপদ সংকেত দেয়ার পরে কিন্তু বিচ খালি হয়ে গেছে। বিচ শুধু নয়, সমস্ত টুরিস্ট এক্টিভিটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
“আমরা সেটা দেখে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের (পিএসও) সাথে কথা বলেছি। তিনি এরপরে বিজিবি, টুরিস্ট পুলিশ, নৌপুলিশ- সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছেন এবং সবার প্রচেষ্টায় তাদেরকে হোটেলে ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছি,” যোগ করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় কেউ ছিল না। এমনকি গতকালকে রাত সাড়ে ৯টার সময় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফোন দিয়েছিলেন যে, এখনো বিচে মানুষ সেলফি তুলছে, আনন্দ করছে; এটাকে তোমরা নিয়ন্ত্রণ করো। পরে আমরা ডিসির সাথে কথা বলার পরে বিজিবি বিচ খালি করেছে।
সরকার চুপ করে থাকেনি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমাকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে কক্সবাজার উপকূলে শনিবার (১৩ মে) দুপুর থেকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়।
তবে মোখার প্রভাবে সাগরের উত্তাল ঢেল দেখতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভিড় করেন ৩০ হাজারের বেশি উৎসুক জনগণ। তাদের সৈকত থেকে সরিয়ে দিতে টহল দেয় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)। শনিবার (১৩ মে) বিকেল ৫টার পর থেকে টহল জোরদার করেন বিজিবি সদস্যরা। কিন্তু সরিয়ে দেয়ার কিছুক্ষণ পর আবারও সৈকতে নেমে যান পর্যটকরা। যারা মোবাইলে লাইভ দেয়ার পাশাপাশি ছবি তুলতে থাকেন। আবার অনেকে অহেতুক সমুদ্রের পানিতে নেমে পড়েন। বিচকর্মী মাইকিং করলেও কোনো পাত্তাই দেন না উৎসুক জনতা।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে আশ্রিত মানুষের সংখ্যা ৭ লাখ ছাড়িয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। বলেন, এবারের প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনা সবচেয়ে ভালো।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রসহ সব রকমের প্রস্তুতি নেয়া আছে। পর্যাপ্ত শুকনা খাবার, সুপেয় পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও নগদ টাকা পাঠানো আছে। এছাড়া মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার পর সৈকত খালি করা হয়েছে।
২০ লাখ নগদ টাকা ও ২০০টন চাল এবং ১৪ টন বিস্কুট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এ পর্যন্ত, জানান তিনি।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এইচএম
