ঢাকা      সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
শিরোনাম

উচ্চ সুদহারে চাপের মুখে বৈশ্বিক ইস্পাত খাত

IMG
26 February 2024, 8:04 AM

বিজনেস ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: বিশ্বজুড়ে সুদহার বৃদ্ধির কারণে চাপের মুখে পড়েছে ইস্পাত খাত। ধীর হয়ে পড়েছে ধাতুটির চাহিদা প্রবৃদ্ধির হার। বছরের বাকি সময়জুড়ে এ প্রবণতা বজায় থাকবে। এমনটা জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক বহুজাতিক মাইনিং ও মেটাল কোম্পানি বিএইচপি।

কোম্পানিটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, উচ্চ সুদহারের কারণে বিশ্বজুড়ে সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রমও কমে গেছে উল্লেখযোগ্য হারে। সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ইস্পাত খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে ইস্পাতের পাশাপাশি এটি উৎপাদনে ব্যবহৃত কয়লা ও ধাতুটির প্রধান কাঁচামাল আকরিক লোহার চাহিদায় নিম্নমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে।

তবে চীন ও ভারতে ইস্পাতের চাহিদা প্রবৃদ্ধি নিয়ে অনেকটাই আশাবাদী বিএইচপি। কোম্পানিটির প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, এই দুই দেশে ধাতুটির চাহিদা বলিষ্ঠভাবে বাড়তে পারে। তবে চীনে চাহিদা বাড়ার বিষয়টি মোটা দাগে দেশটির অর্থনৈতিক নীতি বাস্তবায়নের ওপর ‍নির্ভর করছে।

বিএইচপি জানায়, অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টভুক্ত সব দেশে প্রাণবন্তভাবে চাহিদা বাড়বে। তবে চীনের চাহিদা প্রবৃদ্ধি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। এর কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানায়, অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বেইজিং। সম্প্রতি পাঁচ বছরের ব্যাংক ঋণের সুদহার ৪ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ কমেছে। অর্থনীতিতে নেয়া বিভিন্ন নীতি সফল হলে দেশটিতে ইস্পাতের চাহিদা বড় পরিসরে বাড়বে। এছাড়া প্রপার্টি খাত পুনরুদ্ধারে নেয়া পদক্ষেপের সাফল্যের পরও নির্ভর করছে ইস্পাতের চাহিদা প্রবৃদ্ধি।

চীন বিশ্বের শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদক। গত বছর থেকেই অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে এই খাত। ধাতুটির উৎপাদন কমিয়ে দেয়ার নীতি চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কমে যায় আকরিক লোহার ব্যবহারও। ২০২৩ সালে দেশটিতে ইস্পাত উৎপাদন অপরিবর্তিত ছিল। এ সময় ১০১ কোটি ৯০ লাখ টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন হয়। তবে রফতানির পরিমাণ ছিল ব্যাপক। ফলে প্রকৃত স্থানীয় চাহিদা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে ১৮৮ কোটি ৮৭ লাখ টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে। এ সময় আগের বছরের তুলনায় উৎপাদন প্রায় অপরিবর্তিতই ছিল। চীন বিশ্বের শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদক ও ব্যবহারকারী। দেশটির অর্থনীতিতে শ্লথ গতির কারণে ওই বছর ইস্পাত উৎপাদনে কোনো প্রবৃদ্ধি আসেনি। অন্য শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে জাপান, জার্মানি, তুরস্ক ও ব্রাজিলের উৎপাদন ছিল নিম্নমুখী। তবে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ায় উৎপাদন বেড়েছে।

চলতি বছর বিশ্বজুড়ে ইস্পাতের দাম নিম্নমুখী থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বাজার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ফিচ সলিউশনের গবেষণা ইউনিট বিএমআই সম্প্রতি চলতি বছরে ধাতুটির বৈশ্বিক মূল্য পূর্বাভাস সংশোধন করেছে। আগে টন প্রতি ৭৮০ ডলারের পূর্বাভাস দেয়া হলেও সম্প্রতি তা কমিয়ে ৭৪০ ডলারে ‍নামিয়ে আনা হয়েছে। বছরের শুরুতে প্রত্যাশার চেয়েও কম দামে লেনদেন হয়েছে ধাতুটি। তবে কয়েক মাসের মধ্যে এই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিএমআই জানায়, সংকুচিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতিতে আরো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধও শিগগিরই শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এসব কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর অর্থনীতি বছরজুড়ে বড় ধরনের চাপের মুখে থাকতে পারে, যা ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদা ও দামে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন