চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ গ্লোবাল: চার দিনেও পুরোপুরি নেভানো যায়নি এস আলম গ্রুপের চিনিকলের গুদামের আগুন। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে। এদিকে, চিনির গুদামে আগুনের ঘটনায় কর্ণফুলী নদী দূষণে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। বিপর্যস্ত কর্ণফুলী নদীকে আরও দূষিত করার দায় মিল কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না বলে মনে করছেন তারা। তবে বর্জ্য অপসারণে আলাদা ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছে মিল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার বিকেল থেকে জ্বলছে এস আলমের চিনিকলের গুদাম। আগুনে পুড়ে উত্তপ্ত লাভার মতো গলা চিনি ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের এলাকায়। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ছিটানো পানি। খাল-নালা দিয়ে আলকাতরার মতো কালো এই পানির তীব্র প্রবাহ গিয়ে পড়ছে দুইশ মিটার দূরের কর্ণফুলী নদীতে। এতে মরছে নদীর মাছ ও জলজ প্রাণী। নদীর ভয়াবহ দূষণ ভাবিয়ে তুলেছে পরিবেশ সংশ্লিষ্ট সংগঠন ও বিশেষজ্ঞদের।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া সাংবাদিকদের জানান, নদীতে পোড়া চিনি মিশে যাওয়ার কারণে পানির গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে পানিতে রিজার্ভ যে অক্সিজেন ছিল, তার পরিমাণ অনেকটা কমে যাবে।
এরই মধ্যে দূষণ কবলিত নদী পরিদর্শন করেছে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন। মিল কর্তৃপক্ষ দূষণের দায় এড়াতে পারে না বলে মনে করেন তারা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সমন্বয়ক মুনীরা পারভীন বলেন, ‘কর্ণফুলী নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে তাতে দূষণের মাত্রা পরিমাপের জন্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। ফলাফল পেলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
এদিকে দূষণের বিষয়টিকে বড় করে দেখছে না মিল কর্তৃপক্ষ। বর্জ্য অপসারণে আলাদা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা। এস আলম গ্রুপের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মোস্তাইন বিল্লাহ আদিল জানান, কর্ণফুলী নদীর পানি রক্ষায় বর্জ্য অপসারণে আলাদা ব্যবস্থা নিচ্ছেন তারা।
পুড়তে থাকা গুদামে প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত চিনি ছিল বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার (৪ মার্চ) বিকেল ৪টায় এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন চিনিকলের গুদামে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, ওই চিনির কারখানায় আগুন লাগার পর বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে তারা সংবাদ পায়।
এরপর কর্ণফুলী মডার্ন ফায়ার স্টেশন থেকে দু'টি, চন্দনপুরা থেকে দু'টি, কালুরঘাট থেকে দু'টি, আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের একটিসহ মোট ৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। পরে আরও অনেক ইউনিট যোগ দেয়। আগুন পুরোপুরি নেভাতে এখনও কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com