ঢাকা      বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪, ৬ আষাঢ় ১৪৩১
শিরোনাম

বুথফেরত জরিপে উজ্জীবিত গেরুয়া শিবির, ইন্ডিয়া জোট বলছে ভুয়া

IMG
02 June 2024, 3:33 PM

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ভারতে শনিবার (১ জুন) লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোট পর্ব শেষ হতেই দেশটির গণমাধ্যমগুলো বুথফেরত জরিপ প্রকাশ করতে শুরু করে। এসব জরিপের আভাস বলছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এনডিএ জোট আবার ক্ষমতায়ে বসছে।

তবে বিজেপি বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, বুথফেরত জরিপের মধ্যদিয়ে ফল গণনার দিন কাউন্টিং এজেন্টদের মন ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ভারতের শীর্ষস্থানীয় ৮টি সমীক্ষা সংস্থার প্রকাশিত বুথফেরত জরিপের আভাস বলছে, তৃতীয়বারের মতোই নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স-এনডিএ জোট ক্ষমতায় বসছে।

টাইমস নাও, ইন্ডিয়া টুডে, এবিপি সিভোটার এনডিটিভি, নিউজ এইটিনের মতো মিডিয়া হাউসগুলোর প্রকাশিত এই সমীক্ষার গড় বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের চেয়েও বেশি আসন পাওয়ার সম্ভাবনা মোদির দলের। দলটির ঘোষিত ৪০০ আসনের খুব কাছে বললেও ভুল হবে না।

কিন্তু কেন বিজেপির এত উত্থান, সেই বিষয়ে দেশটির গণমাধ্যম জানাচ্ছে, বিজেপির পোস্টারবয় নরেন্দ্র মোদির একচ্ছত্র জনপ্রিয়তা।

মোদির কথা বলার কৌশল, আন্তর্জাতিকভাবে মোদির গ্রহণযোগ্যতা, গেল ১০ বছরের ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তি খাতে এগিয়ে যাওয়াকে মোদির পক্ষে ভোট পেতে সাহায্য করেছে। এছাড়া সফল চন্দ্রযান অভিযান, রাম মন্দির নির্মাণ, দেশজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ, দ্রুত গতির রেল পরিষেবা, দারিদ্রসীমা থেকে ২০ কোটি মানুষকে উদ্ধার করা।

বিপরীতে বিরোধী জোটের মধ্যে মোদির সমকক্ষ নেতৃত্ব না থাকার সুযোগও নিচ্ছে নরেন্দ্র মোদি গেরুয়া শিবির। তা ছাড়া বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর অধিকাংশের বিরুদ্ধে চরম আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে গেল দশ বছরে গুরুতর কিংবা ইস্যু করার মতো কোনো দুর্নীতির অভিযোগ ‍তুলতে পারেনি ইন্ডিয়া জোটের সদস্যরা।

এ ছাড়া দেশের একটা বড় অংশের মানুষ মনে করতে শুরু করেছেন শাসনভার এমন কারো হাতে থাক যারা এককভাবে সরকার চালাবেন। আর বিরোধী জোটের মধ্যে ২২টি দল সেখানে কারো পক্ষে এককভাবে ২৭২ আসন পাওয়ার সক্ষমতা নেই। ফলে ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স-ইউপিএ সরকারের মতো দুর্বল সরকার ভারতবাসী আর চান না বলেও মনে করছেন ভোট বিশ্লেষকরা।

যদিও বুথফেরত সমীক্ষার আভাস সব সময় সঠিক হয়েছে এমন নয়। এর আগে ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের পরই বুথফেরত সমীক্ষা গেরুয়া শিবিরকে এগিয়ে রেখেছিল, কিন্তু বাস্তবে বিরোধীদের জয়জয়কার ছিল সেখানে।

এবার বুথফেরত সমীক্ষাকে তেমন পাত্তা দিচ্ছেন না বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের দাবি, ইন্ডিয়া জোট ২৯৫ আসন পাবে। শনিবার বুথফেরত জরিপ প্রকাশ হওয়ার পর কংগ্রেস সভাপতি বলেন, বিজেপির বয়ানে বিভ্রান্ত হওয়া উচিত নয়। ইন্ডিয়া জোট অন্তত ২৯৫টি আসন জিতবে। এটা আমাদের মূল্যায়ন।

দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জিবীত থাকার পরামর্শ দিয়েছে তৃণমূলও। দলটির মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এক্স হ্যান্ডেলে দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গে ৪২ আসনের মধ্যে ৩০ আসন পাবে তৃণমূল। কাউন্টিং এজেন্টদের মন ভাঙতে এ ধরনের সমীক্ষা সামনে আনা হচ্ছে বলেও অভিযোগ বিরোধী তৃণমূলের।

অন্যদিকে আম আদমি পার্টি দাবি করেছে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদি আর ফিরছেন না। দলটির নেতা সোমনাথ ভারতী শনিবার এক্সে দেয়া পোস্টে সোমনাথ বলেন, ‘মোদি তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হলে আমি মাথা মুড়িয়ে ফেলব। মিলিয়ে নেবেন আমার কথা। ৪ জুন সমস্ত বুথফেরত জরিপ মিথ্যে প্রমাণিত হবে। দিল্লিতে সাতটি আসনের সব কটিই ইন্ডিয়া জোট পাবে।

তিনি আরও বলেন, ‘মোদির ভয়ে বুথফেরত জরিপে দেখানো হয়নি যে তিনি হেরে যাবেন। তাই আমাদের সকলকেই আসল ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৪ জুন পর্যন্ত। মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচুর পরিমাণে ভোট দিয়েছে।’

শনিবার ভারতে সাত দফার লোকসভা ভোটের শেষ দফা ভোট অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই দফাতে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ। ভোট শেষ হতেই দেশটির শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া হাউসগুলো বুথফেরত সমীক্ষার আভাস দিতে শুরু করে। সেখানে দেখা যায়, এনডিএ জোট ৩৬০ থেকে ৩৯৫ আসন পেতে পারে। আর কংগ্রেস জোট পেতে পারে ১৩২ থেকে ১৮৫ আসন। ভোটের ফল প্রকাশ হবে ৪ জুন। সেদিনই জানা যাবে আসলে কার ভাগ্যে দিল্লির মসনদ।



বাংলাদেশ গ্লোবাল/এফআর

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন