ঢাকা      রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১
শিরোনাম

গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে

IMG
04 July 2024, 5:09 PM

এসআই মিলন, গাইবান্ধা: ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র নদ এবং ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এসব নদ-নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের রাস্তা-ঘাট, ঘরবাড়ি ও আবাদি জমি প্লাবিত হচ্ছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২০ হাজার পরিবার। তবে কমেছে তিস্তার পানি।

এদিকে করতোয়া নদীর পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্য মতে- গত ২৪ ঘন্টায় উচ্চতা ৫৭ সেমি বৃদ্ধি পেয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৭৪ সেমি ও ঘাঘট নদীর পানি ৫১ সেমি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৩ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অন্যদিকে করতোয়া নদীর পানি ৬২ সেমি বৃদ্ধি পেয়ে ১৬০ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তা নদীর পানি ১৭ সেমি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৪৩ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলায় ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ মিলিমিটার।

জানা যায়, গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে জেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করে। এ কারনের নদীর তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট। এসব এলাকার বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন ফসলাদি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারও মানুষ। ফলে এসব এলাকার মানুষের বন্যা আতঙ্কে দিন কাটছে।

নদ-নদীগুলোর পানিবৃদ্ধির কারণে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বিপৎসীমার ওপরে থাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত সদরের কামারজানি, ঘাগোয়া, ফুলছড়ির ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি এলাকায় প্লাবিত হতে শুরু করেছে। পানিবৃদ্ধির ফলে নিচু এলাকার ঘরবাড়িগুলোতে পানি জমতে শুরু করেছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এসব এলাকার পানিবন্দী মানুষরা গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ছেন। এদিকে তিস্তার পানি কমতে থাকায় সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাসিয়া, তারাপুরের প্লাবিত এলাকা জেগে উঠতে শুরু করেছে।

অন্যদিকে যমুনার পানির চাপে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে ১৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বুধবার দুপুরের দিকে উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ উল্যাবাজার এলাকায় যমুনার পানির চাপে বাঁধের অন্তত ৩০ ফিট এলাকা ধ্বসে যায়।

এতে ভরতখালী ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ এলাকা সহ ঘুড়িদহ ইউনিয়নের চিনিরপটল, খামার পবনতাইড়, হলদিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর, বেড়া, গাড়ামারা, দীঘলকান্দি, পাতিলবাড়ী, গুয়াবাডী, কালুরপাড়া, কানাইপাড়া, কুমারপাড়া এবং জুমারবাড়ী ইউনিয়নের কাঠুর, থৈকরের পাড়া ও পূর্ব আমদিরপাড়াসহ কমপক্ষে ১৫টি মৌজার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত এ উপজেলার কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। হঠাৎ করে বাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকে পড়ায় এসব এলাকার বিস্তৃর্ণ জমির পাট, কাউন, তীল ও শাকসবজিসহ বর্ষাকালীন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। পরিবারের শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদি পশু নিয়ে নিয়ে বিপাকে পড়েছে বন্যা কবলিতরা।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ভারি বর্ষণ ও উজনের ঢলে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি বাড়ছে। এরমধ্যে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। তবে কমেছে তিস্তার পানি। সব ধরণের ঝুঁকি মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুত রয়েছে।

জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, শুকনা খাবার, জি আর চাল, ক্যাশ মজুদ রয়েছে। ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য নৌকা, স্পীড বোট প্রস্তুত রয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ইউনিয়ন ভিত্তিক বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র। প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রচার প্রচারণা চলমান রয়েছে।



বাংলাদেশ গ্লোবাল/এফআর

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

এ বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন