ঢাকা      সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
শিরোনাম

ইরানি জনগণের মাঝে প্রেসিডেন্ট রাইসি কেন জনপ্রিয় ছিলেন?

IMG
21 May 2024, 10:41 AM

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: একজন বিশ্লেষকের মতে: আয়াতুল্লাহ রাইসি ছিলেন একজন জনপ্রিয় নেতা। তিনি কাউকে কটাক্ষ করে কথা বলতেন না এবং কারো সঙ্গে বাদানুবাদেও জড়াতেন না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে তাকে কোনো কর্মসূচি নিতে দেখা যায়নি।

এক. বিভিন্ন প্রদেশের নানা প্রজেক্টের কাজের অগ্রগতি দেখার জন্য আয়াতুল্লাহ রাইসি এত ঘন ঘন সারাদেশ চষে বেড়াতেন যে, দূরদূরান্তের ইরানি জনগণ তার মৃত্যুর খবর শুনে একথা বলাবলি করেন যে, “মনে হয় তিনি এই সেদিন আমাদের প্রদেশ সফরে এসেছিলেন।” ইরানি জনগণ যে কারণে তাদের প্রেসিডেন্টের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তা হচ্ছে, তারা বহুবার কাছে থেকে আয়াতুল্লাহ রাইসিকে দেখেছেন এবং তার সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। এমন নেতাকে এত সহজে হারানোর বিষয়টি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। করোনা মহামারির কঠিন দিনগুলোতে আয়াতুল্লাহ রাইসি বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক এত বেশি পরিদর্শন করেছেন যে, ইরানের সকল জনগণের কাছে মনে হচ্ছে, তারা সবাই কাছে থেকে রাইসিকে দেখেছেন। স্বাভাবিকভাবেই এমন একজন প্রেসিডেন্টকে হারানোর বেদনা সহজে মেনে নেওয়া যায় না।

দুই. আয়াতুল্লাহ রাইসি ছিলেন একজন জনপ্রিয় নেতা। তিনি কাউকে কটাক্ষ করে কথা বলতেন না এবং কারো সঙ্গে বাদানুবাদেও জড়াতেন না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে তাকে কোনো কর্মসূচি নিতে দেখা যায়নি। কোনো কারণে তিনি জনগণকে উদ্বিগ্ন হতে দেননি। বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকা এমন একজন নেতারই জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকার কথা এবং হয়েছেও তাই।

তিন. প্রেসিডেন্ট রাইসি ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিলেও জয়ী হতে পারেননি। এর আগে তিনি যখন ইমাম রেজা (আ.)-এর মাজার ট্রাস্টের প্রধান ছিলেন, তখন তিনি জনগণের মাঝে আধ্যাত্মিকতার প্রতি আকর্ষণ তৈরি করতে সক্ষম হন। ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হওয়া সত্ত্বেও তিনি জনগণের মাঝে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধার্মিকতার প্রসার ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। ২০১৭ সালেই তাকে বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পর সেখানেও তিনি জনগণকে আধ্যাত্মিকতার প্রতি আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন। ২০২১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করার পর এই কাজ তিনি আরো স্বাচ্ছন্দ্যে সম্পন্ন করেন। একজন মানুষের অন্তরে সত্যিকার অর্থে খোদাভীতি থাকলেই কেবল তিনটি আলাদা আলাদা দায়িত্ব পালনের সময় জনগণকে ধর্ম পালনের দিকে আহ্বান করার কাজটি এত সূচারুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব।

চার. বাহ্যিকভাবে আয়াতুল্লাহি রাইসি পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন। কিন্তু তার একটি বড় অর্জন ছিল ইরানে জনগণের জন্য একটি জবাবদিহিমূলক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, যা তার মৃত্যুর মাধ্যমে দৃঢ়তর ও গভীরতর হয়েছে। ইরানি জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার কাজে দেশটির শত্রুরা যে কোটি কোটি ডলার খরচ করছে, আয়াতুল্লাহ রাইসির মৃত্যুর ফলে তার কার্যকারিতা ব্যর্থ হতে বাধ্য। লে. জেনারেল কাসেম সোলায়মানিকে হত্যার ফলে যদি ইরানের শক্তিমত্তা ও সামাজিক বন্ধন শক্তিশালী হয়ে থাকে, তাহলে আয়াতুল্লাহ রাইসির মৃত্যুর ফলে ইরানের সরকার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস যে শক্তিশালী করবে; তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন