ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ চলছে। আগামী মাসেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান রয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের কারণে ইসরাইলের সঙ্গে সব রকম আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। সপ্তাহান্তে অনেক ক্যাম্পাস শান্ত ছিল; এই ইস্যু নিয়ে দু'টি পরস্পরবিরোধী দল তৈরি হয়েছে এবং ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রবিবার উভয় পক্ষের বিক্ষোভকারী চিৎকার করে স্লোগান দিয়েছে ও একে অপরের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছে।
ব্লুমিংটনে ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়, অ্যারিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় ও সেন্ট লুইসে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক ক্যাম্পাস থেকে শনিবার প্রায় ২৭৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিউইয়র্ক পুলিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীদের ছাউনি সরিয়ে দেয় এবং ১৮ এপ্রিলে ১০০-র বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করায় গোটা দেশে এই সমস্যা নিয়ে গ্রেফতারকৃতের সংখ্যা ৯০০-র কাছাকাছি।
এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা দেশজুড়ে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনিপন্থী ছাউনি তৈরি করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যেমন: গ্রেফতার, ফৌজদারি অভিযোগে মামলা, শিক্ষার্থী পদ বাতিল। চলে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের সহজভাবে আবেদন-নিবেদনও করা হয়েছে।
এই বিক্ষোভগুলির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থী ও ক্রমবর্ধমান সংখ্যক শিক্ষক উভয়েই বিক্ষোভকারীদের সাধারণভাবে ক্ষমার দাবি জানাচ্ছেন। উদ্বেগের বিষয় হলো, শিক্ষার্থীদের বাকি জীবনে এই বাতিলীকরণ ও আইনি নথি কোনও প্রভাব ফেলবে কিনা। ক্যালিফর্নিয়া, জর্জিয়া ও টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের নেতৃত্ব বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছেন বা প্রতীকী অনাস্থা ভোট পাশ করেছেন।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কারবি বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন “জানেন যে, তীব্র ভাবাবেগ কাজ করছে”, তবে এই বিক্ষোভ সামলানোর ভার স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হাতেই ছাড়বেন তিনি। এবিসি-র “দিস উইক” অনুষ্ঠানে কারবি বলেছেন, “নিজস্ব মতামত জানানো ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ্যে ভাগ করে নেওয়ার দরকার ছিল জনগণের, তবে তা শান্তিপূর্ণ হতে হবে।”
রবিবার সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে সিনেটের রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেল একে “বিপজ্জনক পরিস্থিতি” বলে অভিহিত করেন এবং এই পরিস্থিতির সব দায় তিনি কলেজ প্রশাসনের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। এনবিসি-র “মিট দ্য প্রেস” অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ইহুদি-বিদ্বেষ রয়েছে। এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই দেশে এমন দৃশ্য দেখে আমি স্তম্ভিত।”
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থী শিক্ষার্থীরা তাঁবু খাঁটিয়ে সারাদিন অবস্থান করছেন; যেখানে রবিবার বিবদমান দুই পক্ষের সমর্থকরা ভিড় করতে শুরু করলে পুলিশ ব্যারিকেড তৈরি করে এবং কয়েকশো বিক্ষোভকারীকে রোখার চেষ্টা করে। পাল্টা বিক্ষোভকারীরা “স্ট্যান্ড ইন সাপোর্ট অফ জিউইশ স্টুডেন্টস” নামে মিছিল ও সভা আয়োজন করেছিল। তারা বলেছে, তাদের লক্ষ্য হলো, “ঘৃণা ও ইহুদি-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো।”
সেন্ট লুইসে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসের মধ্যে কয়েকটি ভবনে তালা দিয়ে রেখেছিল এবং শনিবার বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন পরিষদের মিশৌরি বিভাগ এই গ্রেফতারিকে “বাড়াবাড়ি” বলে নিন্দা জানিয়েছে।
বোস্টনে নর্থ ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে একটি ছাউনিকে শনিবার সরিয়ে দিয়েছে দাঙ্গা পুলিশ। ম্যাসাচুসেটস স্টেট পুলিশ বলেছে, প্রায় ১০২ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী আচরণের অভিযোগ আনা হবে।
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com