ঢাকা      শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১
শিরোনাম

পর্তুগালকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ফ্রান্স, রোনালদোর বিদায়

IMG
06 July 2024, 11:28 AM

স্পোর্টস ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে পেনাল্টি সেভের হ্যাটট্রিকে পর্তুগালকে কোয়ার্টার ফাইনালে তুলেছিলেন ডিয়েগো কোস্তা। কিন্তু শুক্রবার আর তাঁর গ্লাভস বাঁচাতে পারেনি রোনালদোদের। হামবুর্গে টাইব্রেকারে পর্তুগালকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। চোখের জলে বিদায় হলো রোনালদো, পেপের। গ্যালারিতে বসে তাঁদের সঙ্গে চোখ ভেজালেন লুইস ফিগো।

টাইব্রেকারে পাঁচে পাঁচ। একশো শতাংশ সাফল্য দিদিয়ের দেশমের দলের। ফ্রান্সের গোলদাতা ডেম্বেলে, ফোফানা, কুন্ডে, বার্কোলা এবং থিও হার্নান্দেজ। পর্তুগালের হয়ে গোল করেন রোনালদো, বার্নার্ডো সিলভা, নুনো মেন্ডিস। মিস করেন পর্তুগালের জোয়াও ফেলিক্স। তাঁর শট পোস্টে লাগে। এটাই দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়। নব্বই মিনিটের শেষে গোলশূন্য। ১২০ মিনিটের শেষেও স্কোরলাইনে কোনও পরিবর্তন নেই।

শেষমেষ টাইব্রেকারে জিতে সেমিফাইনালে স্পেনের মুখোমুখি হবে ফ্রান্স। পর্তুগালের বিদায়ে ইউরোয় রোনালদো যুগের অবসান হল। শেষবারের মতো মাঠ ছাড়লেন পর্তুগিজ মহাতারকা। স্পেন-জার্মানির পর আরও একটি কোয়ার্টার ফাইনাল গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তবে দুই ম্যাচের টেম্পোর মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। রাতের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল যতোটা উপভোগ্য এবং গতিময়, ফ্রান্স-পর্তুগাল ম্যাচ ঠিক ততোটাই ম্যাড়ম্যাড়ে। গোটা ম্যাচে হাতেগোনা সুযোগ। তার মধ্যে নিশ্চিত সুযোগ বলতে দুই থেকে তিনটি। ম্লান ক্রিস্টিয়ানো রোনালো।

এবার মেনে নিতেই হবে যে, সিআরসেভেনের জমানার অবসান হতে চলেছে। অন্যদিকে কিলিয়ান‌ এমবাপ্পেও সেভাবে নজর কাড়তে পারেননি। নব্বই মিনিটের শেষে গোলশূন্য। অতিরিক্ত সময়ের বিরতিতে নিজের আর্মব্যান্ড খুলে দেশমের হাতে ধরিয়ে দেন এমবাপ্পে। তারকা ফুটবলার বুঝিয়ে দেন, আর খেলার মতো অবস্থায় নেই তিনি। পর্তুগালের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়ার্ধে মুখের ডানদিকে বল লাগে ফ্রান্সের অধিনায়কের। নাক ধরে বেশ কিছুক্ষণ মাঠেই শুয়ে থাকেন। এদিন ১০৫ মিনিটের ফুটবল খেলার পরই বেঞ্চে বসে নাকে আইস প্যাক লাগাতে দেখা যায় তাঁকে।

চলতি ইউরোয় এখনও পর্যন্ত সেরাটা দিতে পারেনি দুই দলই। তুরস্কের বিরুদ্ধে ৩-০ গোলে জয় ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনও পারফরম্যান্স নেই পর্তুগালের। গ্রুপের শেষ ম্যাচে জর্জিয়ার কাছে হার মানেন রোনালদোরা। অন্যদিকে তথৈবচ ফ্রান্সও। শেষ চারে উঠলেও এখনও পর্যন্ত ছন্দে পাওয়া যায়নি বিশ্বকাপের রানার্স অপদের। বিশেষ করে অ্যাটাকিং বিভাগে।

গোলের খাতা খুলতে পারেননি দুই তারকা রোনালদো এবং এমবাপ্পে। এই ম্যাচই তাঁদের অগ্নিপরীক্ষা ছিল। কিন্তু তাতে উত্তীর্ণ হতে পারেনি দুই তারকা ফুটবলার। শুরুটা তুলনায় ভালো করে পর্তুগাল। বাঁ প্রান্ত ধরে বিপক্ষের বক্সে বেশ কয়েকবার ঢুকে পড়েন রাফায়েল লিও। কিন্তু সেই অর্থে গোলমুখ খুলতে পারেননি। সামনে একা রোনালডোকে রেখে দল সাজান মার্টিনেজ। কিন্তু বয়সের সঙ্গে ক্ষিপ্রতা কমেছে সিআরসেভেনের।

এদিনও অফকালার দেখায় পর্তুগিজ অধিনায়ককে। প্রত্যেক ম্যাচে শিরোনামে থাকলেও পার্থক্য গড়ে দিতে পারেননি রোনালদো।‌ অন্যদিকে এখনও পর্যন্ত ইউরোয় গোলের সন্ধানে এমবাপ্পে। গতি বাড়িয়ে বার দুয়েক বিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়লেও আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারেননি।

প্রথমার্ধে কোনও দলই গোলের ওপেন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। যদিও বল পজিশন বেশি ছিল পর্তুগালের। ম্যাচের ২০ মিনিটে গোল লক্ষ্য করে প্রথম শট ফ্রান্সের। থিও হার্নান্দেজের দূরপাল্লার শট বাঁচান কোস্তা। তার দু'মিনিটের মধ্যে গতি বাড়িয়ে বিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েন এমবাপ্পে। কিন্তু বিপদ সৃষ্টি করতে পারেননি।

এদিন থুরামের পরিবর্তে কোলো মুয়ানিকে প্রথম একাদশে রাখেন দিদিয়ের দেশম। রাখেননি ডেম্বেলেকেও। প্রথমার্ধে পর্তুগালের একমাত্র হাফ চান্স ৩০ মিনিটে। লিওর শট সরাসরি তালুবন্দি করেন ফ্রান্সের কিপার। প্রথমার্ধে আক্রমণ তৈরি হলেও গোলের পজিটিভ সুযোগ পায়নি কোনও দলই।

দ্বিতীয়ার্ধে খেলা কিছুটা ওপেন হয়ে যায়। বিরতির পর ব্যাক টু ব্যাক জোড়া সুযোগ পর্তুগালের। ৬২ মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজের শট বাঁচান ফরাসি কিপার। তার দু'মিনিটের‌ মধ্যে দারুণ সেভ মাইগনানের। ৬৪ মিনিটে ভিটিনহার শট বাঁচান ফ্রান্সের কিপার। দ্বিতীয়ার্ধে জোড়া সুযোগ নষ্ট ফ্রান্সেরও।

৬৬ মিনিটে কোলো মুয়ানির নিশ্চিত গোল বাঁচান কোস্তা‌‌। তার পাঁচ মিনিটের মধ্যে আবার মিস। এবার ৭১ মিনিটে সিটার নষ্ট করেন কোলো মুয়ানি‌। সামনে একা পর্তুগালের কিপার কোস্তাকে পেয়েও বাইরে মারেন। কয়েকটা হাতেগোনা সুযোগ ছাড়া নব্বই মিনিটে কোনও দলই গোলের নিশ্চিত সুযোগ পায়নি। ফাইনাল থার্ডে ব্যর্থতা। নিজেদের সেরার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি ফ্রান্স এবং পর্তুগাল। গোটা ১২০‌ মিনিট কেন রোনালদোকে বয়ে বেড়ানো হলো, তার কোনও ব্যাখ্যা নেই।

শেষ মিনিটে এমবাপ্পের নির্বিষ শট তালুবন্দি করেন কোস্তা। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে সুযোগ ছিল পর্তুগালের সামনে। কিন্তু ম্যাচের ৯৩ মিনিটে কনসেসাওয়ের পাস থেকে মিস রোনালোর। সামনে একা ফরাসি গোলকিপার মাইগনানকে পেয়েও বক্সের ওপর দিয়ে ভাসিয়ে দেন। ম্যাচের অন্তিমলগ্নে সুযোগ পেয়েও কোনও দলই কাজে লাগাতে পারেনি।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন