কক্সবাজার, বাংলাদেশ গ্লোবাল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মিয়ানমারের কথা ও কাজে মিল নেই। এখন মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের নিয়ে আগে থেকে করা আশঙ্কার কিছু কিছু আলামত দেখা যাচ্ছে। আজ শুক্রবার (৩১ মে) দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ সকাল ১১টায় উখিয়ার ১৯ নম্বর ঘোনারপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এপিবিএন কার্যালয়ে যান। সেখানে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সভা করেন এপিবিএন কর্মকর্তারদের সঙ্গে। এরপর কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আমরা আগে থেকে বলে আসছিলাম তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো না গেলে এখানে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। এখানে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের হাব তৈরি হতে পারে। অস্ত্রের ঝনঝনানি হতে পারে। অনেক কিছুই হতে পারে। এই হতে পারার মধ্যে কিছু কিছু আলামত এখন দেখা যাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যারা যুদ্ধ করছে, তাদের কয়েকজনের আনাগোনা এখানে (রোহিঙ্গা ক্যাম্পে) দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় ভয়ের বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশ কোনো মাদক উৎপাদন করে না। কিন্তু মিয়ানমার থেকে মাদক আসছে অনেক আগে থেকে। এখন ক্যাম্পের কিছু সংখ্যক লোক মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে অস্ত্র ও খুনে জড়িতদেরও চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নেওয়াই আমাদের মূল কাজ।
আসাদুজ্জামান খান কামাল আরও বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যুদ্ধ চলছে। মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মি এবং কয়েকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল যুদ্ধ করে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ওই দেশের কোনো নাগরিক বা অন্য কাউকে আর অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাতের অস্থিরতার আঁচ এসে পড়ছে ক্যাম্পগুলোতে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে কাউকে যেমন ঢুকতে দেওয়া হবে না, এদিক থেকেও কাউকে যেতে দেওয়া হবে না। এটা নিয়ে কঠোর অবস্থানে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রয়েছে অস্ত্রের ঝনঝনানি। বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। তারা ক্যাম্পে নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত করছে। এখন আর এসব চলবে না। নিয়মিত ক্যাম্পে টহল চলবে। এপিবিএন, পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব একসঙ্গে যৌথ টহল দিবে। আর সবসময় প্রস্তুত সেনাবাহিনী। যখন জরুরি প্রয়োজন পড়বে, তখন সেনাবাহিনীও কাজ করবে।
এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্পটির এ-৭ ব্লকের পাহাড়ি এলাকা পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যান টেকনাফে। ওখানে বিজিবির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।
পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, এপিবিএন প্রধান সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. আমির জাফর, ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. ইকবাল, ১৬ এপিবিএনের অধিনায়ক হাসান বারী এসময় উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কক্সবাজার হিলটপ সার্কিট হাউসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন।
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com