ঢাকা      শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১
শিরোনাম

টানা ৫৪ ঘন্টা পর সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার

IMG
02 October 2024, 3:19 PM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: টানা ৫৪ ঘন্টা পর শিল্পাঞ্চল সাভারের আশুলিয়ায় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন শ্রমিকরা। আজ বুধবার দুপুর ১টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা কারখানা মালিককে আটক করে পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা রাস্তা ছেড়ে কারখানায় সামনে অবস্থান নিয়েছেন।

গত সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার বার্ডস গ্রুপের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সার্ভিস বেনিফিট ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এদিকে, টানা তিন দিন পর নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক, বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়ক ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটে আটকে থাকা হাজার হাজার যানবাহন সীমিত আকারে চলাচল শুরু করেছে। বিকেল নাগাদ যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে‌ আসবে বলে জানিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ।

এর আগে বুধবার সকালে বাইপাইল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অবরোধের কারণে পার্শ্ববর্তী বাইপাইল আব্দুল্লাহপুর সড়ক ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও যানজট সৃষ্টি হয়েছে। সবমিলিয়ে ৩ সড়কে প্রায় ৩০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যানজটের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ও বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়ক। এসব সড়কে বেশির ভাগই মালবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ব্যাংক ও স্বল্প সংখ্যক যাত্রীবাহী বাস রয়েছে। যানজটের কারণে অনেককেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যস্থলে রওনা হতে দেখা গেছে।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, ২৭ তারিখের ইস্যু করা নোটিশের মাধ্যমে গত ২৮ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার বার্ডস গ্রুপের সকল কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়। এ সময় শ্রমিক কর্মচারীদের আগস্ট মাসের বেতন সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখ ও সার্ভিস বেনিফিটসহ ক্ষতিপূরণ ৩০ সেপ্টেম্বর পরিশোধের দিন ধার্য করা হয়। চুক্তিমত শ্রমিকদের বেতনের টাকা পরিশোধ করলেও ৩০ সেপ্টেম্বর সার্ভিস বেনিফিটসহ ক্ষতিপূরণের টাকা প্রদানের আরও তিন মাস সময় চেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটি। নির্ধারিত টাকা পরিশোধ না করায় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।

এদিকে, শ্রমিকদের টাকা পরিশোধ না করলেও শ্রমিক নেতাদের প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা উৎকোচ হিসাবে প্রদান করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

অবরোধকারী শ্রমিকরা জানান, আজকে তিন দিন ধরে আমরা খেয়ে না খেয়ে মহাসড়কে অবস্থান করছি। কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের পাওনা পরিশোধের তারিখ দিয়ে সেই তারিখ আবার পরিবর্তন করে ৩ মাস সময় বর্ধিত করেছে। এরই মধ্যে মালিক পক্ষের লোকজন কারখানার বিভিন্ন মেশিনারিজ ও ঝুটসহ মূল্যবান মালামাল বিক্রি করে দিয়েছে। এখনো কোটি কোটি টাকার মেশিন ভেতরে রয়ে গেছে। সেখানে আমাদের পাওনা মাত্র ২৬ কোটি টাকা। আমাদের বেতন পরিশোধের নির্দিষ্ট তারিখ দেয়ায় আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে আশুলিয়ায় এসেছি। এখানে আমাদের থাকা খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় রোদে পুড়ে এবং বৃষ্টিতে ভিজে মহাসড়কেই অবস্থান করছি। দেশের সরকার কিংবা বিজিএমইএ'র এমন কোনো লোক কি নেই যারা আমাদের পাওনা পরিশোধের দায়িত্ব নেবেন। আমাদের অনেকেই ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে এখানে এসেছি। যতক্ষণ আমাদের পাওনা পরিশোধ করা না হবে ততক্ষণ আমরা সড়কেই অবস্থান করবো।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিক শহিদুল ইসলাম বলেন, একজন লোকের জন্য আমরা ছয়-সাত হাজার শ্রমিক তিন দিন ধরে রাস্তায়। সড়ক অবরোধের কারণে গাড়ি বন্ধ থাকায় আটকে পড়া পরিবহনে থাকা কাঁচামালসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা রাস্তা অবরোধ করে রাখতে চাই না। অবিলম্বে বার্ডস গ্রুপের মালিক মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করে আমাদের পাওনা পরিশোধ করা হোক।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বার্ডস গ্রুপের মালিককে আটকের খবর পেয়ে দুপুর ১টার দিকে আন্দোলনরত শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে দিয়েছেন। এরপর সড়কটিতে যান চলাচল শুরু হয়েছে।


বাংলাদেশ গ্লোবাল/জেএস

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন