ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: যুক্তরাষ্ট্রে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট যেই নির্বাচিত হোক তাতে চীনের কিছুই যায়-আসে না। কেননা রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় আমলে বেইজিংয়ের সঙ্গে প্রায় একই আচরণ করেছে ওয়াশিংটন। আগামী সময়েও একই উত্তেজনা বিরাজ করবে জানিয়ে মার্কিন নির্বাচনের সংবাদগুলো সেন্সরের মাধ্যমে ফিল্টার করে প্রচার করছে চীন। তবে বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিশ্বের এই দুই বৃহত্তম অর্থনীতি এবং প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তির মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
বেইজিংয়ের বাসিন্দা লি শুও বলেন, ‘আমাদের কাছে যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হোক তাতে কিছু যায় আসে না। তাঁরা সবই একই।’
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের শাসনামলে চীনের প্রতি বিরূপ আচরণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছেন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট। এছাড়া, চীনা টেলিকম জায়ান্ট হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে চালানো হয়েছে অপপ্রচার। করোনার উৎপত্তি নিয়েও বেইজিংকে নানাভাবে হেয় করেছেন ট্রাম্প।
এদিকে, গত চার বছরে চীনের সাথে প্রায় একই আচরণ করেছেন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাঁর আমলে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে চীনের হুমকির বিষয়ে মার্কিন উদ্বেগ আরও গভীর হয়েছে। চীনা প্রযুক্তি শিল্পের বিনিয়োগ এবং রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছেন বাইডেন। তাছাড়া তাইওয়ানের পক্ষে বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনে ওয়াশিংটন-বেইজিং উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অবস্থায় মার্কিন নির্বাচন নিয়ে কোনও মাথাব্যাথা নেই চীনের। ডোনাল্ড ট্রাম্প বা কমলা হ্যারিস যেই ক্ষমতায় আসুক, তাতে কিছুই আসে-যায় না বেইজিংয়ের।
সাংহাইয়ের ফুদান ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর আমেরিকান স্টাডিজের পরিচালক উ জিনবো বলেন, লোকেরা এই দুই প্রার্থীর ব্যাপারে আশাবাদী নয়।
চীনা নাগরিকদের অভিযোগ, নির্বাচনের পরও দুই দেশের মধ্যে একই উত্তেজনা বিরাজ করবে এমনটি বোঝাতে বেইজিংয়ে মার্কিন নির্বাচনের সংবাদগুলো সেন্সরের মাধ্যমে ফিল্টার করে প্রচার করছে জিনপিং প্রশাসন। এতে, নির্বাচনের প্রকৃত তথ্য জানতে পারছে না তারা।
বেইজিংয়ের রেনমিন ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শি ইয়ানহংয়ের মতে, হ্যারিস বা ট্রাম্প যেই পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রপতি হন না কেন, চীনের প্রতি মার্কিন নীতির ধারাবাহিকতা প্রায় নিশ্চিতভাবেই সম্ভাব্য বড় পরিবর্তনকে ছাড়িয়ে যাবে।
যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন, আমেরিকা কি বসে আছে?যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন, আমেরিকা কি বসে আছে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, কমলার তুলনায় ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে যুক্তরাষ্ট্র-চীন উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। কারণ রিপাবলিকান এই নেতা অনেকটা অপ্রচলিত পদ্ধতিতে ওয়াশিংটন-বেইজিং সম্পর্ক পরিচালনা করেন বলে মত তাদের। বিপরীতে, কমলা ক্ষমতায় এলে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার পথ কিছুটা খোলা রাখবেন বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
এদিকে ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনা প্রভাব কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের উভয় দলই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখে। অর্থনীতি ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত ওয়াশিংটন-দিল্লি পারস্পরিক সমঝোতা ক্রমেই বাড়ছে। তাই ট্রাম্প-কমলা যে-ই আসুক এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে দ্য ডিপ্লোম্যাটের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
সাংহাইয়ের ফুদান ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর আমেরিকান স্টাডিজের পরিচালক উ জিনবো বলেন, ‘ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের জন্য আরও বড় চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করবেন। মূল সমস্যা হলো, তিনি ইউএস-চীন সম্পর্ককে একটি অপ্রচলিত পদ্ধতিতে পরিচালনা করে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় কে আসছে তার ওপর নির্ভর করবে সম্পর্কের চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে পরিবর্তিত হবে।’
বাংলাদেশ গ্লোবাল/জেএস
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com