ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ‘দলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টের দোসর’ অভিযোগ ওঠায় সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। প্রায় চার মাস পর সেই ১২ বিচারপতির সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। গতকাল শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সেই ১২ জন বিচারপতির বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
কোর্ট প্রশাসন জানিয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ১২ জন বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি ছুটিতে পাঠান। এরপর ১২ জনের মধ্যে ২০২৫ সালের ৩০ জানুয়ারি একজন বিচারপতি পদত্যাগ করেন। এছাড়া দুইজন বিচারপতি হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাননি এবং অপর দুইজন বিচারপতি ইতোমধ্যে অবসর নিয়েছেন। এছাড়াও চারজন বিচারপতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং অপর তিন বিচারপতির বিরুদ্ধে প্রাথমিক অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।
এর আগে, ২০২৪ সালের ১৫ অক্টোবর ‘দলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টের দোসর’ বিচারকদের পদত্যাগের দাবিতে হাইকোর্ট ঘেরাও করতে ফেসবুকে ঘোষণা দেন সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম। পরদিন মিছিল নিয়ে হাইকোর্ট চত্বরে আসেন শিক্ষার্থীরা। হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে দক্ষিণ গেট দিয়ে ঢুকে তারা হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নেন। সঙ্গে ছিলেন সারজিস আলম। আদালত প্রাঙ্গণে হাসনাত-সারজিসসহ অন্য শিক্ষার্থীদের নানা স্লোগান দিতে শোনা যায়। আগে থেকেই সেখানে অবস্থান করে শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ। এর সঙ্গে হাইকোর্ট বিভাগের ‘দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ’ বিচারপতিদের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজ।
কর্মসূচি চলার মধ্যে বেশ কিছু বিচারপতি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে আলোচনার পর ছাত্রদের সামনে এসে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা। বিচারপতি অপসারণের বিষয়ে রেজিস্টার জেনারেল বলেন, বিচারপতিদের পদত্যাগে আপনাদের যে দাবি, আসলে বিচারপতিদের নিয়োগকর্তা হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি। পদত্যাগ বা অপসারণ রাষ্ট্রপতির দফতর থেকে হয়ে থাকে। এখানে প্রধান বিচারপতির যেটা করণীয়, উনি সেটা করেছেন। আপাতত ১২ জন বিচারপতিকে প্রাথমিকভাবে কোন বেঞ্চ দেওয়া হচ্ছে না। বেঞ্চ না দেওয়ার অর্থ হলো, আগামী ২০ অক্টোবর কোর্ট খুলবে, তখন তারা বিচার কাজে অংশ নিতে পারবেন না।
এদিকে, বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন বিচারপতিদের অপসারণ সংক্রান্ত ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহালের পর ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। কোন বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে এই কাউন্সিল যাচাই-বাচাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ পাঠান। সংবিধান অনুসারে, প্রধান বিচারপতি ও জ্যেষ্ঠ দুইজন বিচারপতির সমন্বয়ে এ কাউন্সিল গঠিত হয়। এরপর কয়েকজন বিচারপতির আচরণের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে কাউন্সিল। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন বিচার কাজের বাইরে থাকা (বেঞ্চ না পাওয়া) তিন বিচারপতি গত ১৯ নভেম্বর পদত্যাগ করেন।
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com