ঢাকা      বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
শিরোনাম

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচে পানির জন্য হাহাকার

IMG
11 June 2025, 3:34 AM

স্পোর্টস ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: টিকিটের জন্য অনলাইনে যুদ্ধ করে এক দফা মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়েছেন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। এরপর তারা শারীরিক ক্লান্তিও উপহার পেলেন বাফুফের দুর্বল ব্যবস্থাপনায়। মঙ্গলবার ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে এক পর্যায়ে আধা লিটারের এক বোতল পানির মূল্য হাঁকা হয়েছে ১০০ টাকা। আর পাঁচ লিটারের বোতল ৫০০ টাকা। সেটাও ছিল যেন সোনার হরিণ। পানি কিনতে রীতিমতো যুদ্ধে নামতে হয় সমর্থকদের।

হামজা চৌধুরী, শমিত সোমসহ বেশ কয়েকজন প্রবাসী ফুটবলার বাংলাদেশ জাতীয় দলে যোগ হওয়ায় এই অঙ্গনে যেন নতুন জোয়ার উঠেছে। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও গ্যালারি পূর্ণ হয়ে যায় বিকাল তিনটার মধ্যেই। মাঝে এক পশলা বৃষ্টি এলেও সমর্থকদের উন্মাদনায় ভাটা পড়েনি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় স্বস্তি মেলেনি দেশের ফুটবল ভক্তদের।

এদিন স্টেডিয়ামের গেট খোলা হয় দুপুর দুইটায়। বাইরে তখন দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সমর্থকরা। সূর্য তখন মাঝে আকাশে তেতে উঠেছে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বাইরে থেকে পানির বোতল কেনা গেলেও তা নিয়ে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। অবশ্য এই ঘোষণা আগে থেকেই ছিল। তারপরও গরমের কথা ভেবে অনেকেই কিনেছেন।

সেসময় বাইরে থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়, ভেতরে পানির ব্যবস্থা রয়েছে। শুরুতে ছিলও, কিন্তু বেজায় দাম। প্রতি গ্লাস ১০ টাকা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সেই পানির সরবরাহও শেষ। এরপর মাঝে-মধ্যে দুই-এক কেস পানি মিললেও তার দাম বেড়ে যায় আরও। এক পর্যায়ে আর পাওয়াই যায়নি।

এমনিতেই গ্রীষ্মের প্রচণ্ড খরতাপে জনজীবন অতিষ্ঠ, ঠিক তখন যদি তৃষ্ণা মেটানোর জন্য পানি না পাওয়া যায়, তাতে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হবেন সমর্থকরা। অনেকে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমন বড় ম্যাচে কীভাবে এমন প্রাথমিক চাহিদার ব্যবস্থা করা হয় না, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

সুদুর কুমিল্লা থেকে আসা কুমিল্লা পলিটেকনিকের ছাত্র ইমরান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'আমি পানি কিনতে কয়েকবার এসেছি। কিন্তু পাইনি। এবার যখন পেলাম তখন ৫ লিটার বোতলের পানি চেয়েছে ৩০০ টাকা। আমি বললাম, "৮০ টাকার পানি এত দাম চাইছেন কেন?" তাতে এক পর্যায়ে উল্টো তারা আমার দিকে তেড়ে আসে। শুরুতে কয়েকজন প্রতি গ্লাস পানি ১০ টাকায় বিক্রি করেছে, এখন সেটা নেই।'

একই সঙ্গে হতাশাও প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, 'আমি দাম কিছু কমাতে বলছিলাম, কিন্তু কয়েকজন ৩০০ টাকাতেই কিনে নিয়েছে। এখন সেটাও নাই। এখন খুব তৃষ্ণার্ত। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) অবশ্যই এসব বিষয়ে খেয়াল রাখার দরকার ছিল। এখানে দিনে-দুপুরে ডাকাতি হচ্ছে।'

দর্শকরা যখন এসব অভিযোগ জানান, ঠিক তখনই একজন মাথায় করে এক কেস পানি বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। মুহূর্তেই তার পেছনে বিশাল লাইন। নির্দিষ্ট কর্নারে যখন তিনি পৌঁছান, তখন প্রতি আধা লিটার পানির বোতলের দাম হাঁকানো হয় ৫০ টাকা। কিন্তু তাও কয়েক সেকেন্ড যেতেই শেষ। এরপর অপেক্ষায় ছিলেন অনেক দর্শক। এর মধ্যেই কয়েকজন দর্শক জানান, তারা ১০০ টাকা দিয়েছেন, কিন্তু বোতল পেয়েছেন একটি।

এরপর পানি নিয়ে মারামারি ও বোতল কেড়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। একপর্যায়ে বেশ কয়েকজনকে এও বলতে শোনা যায়, 'ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)-এর কাছে শেখা উচিত বাফুফের। মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে তো সারা বছরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা হয়। কই, সেখানে তো ১০০ টাকা দিয়ে ছোট পানির বোতল কিনে খেতে হয় না!' সব মিলিয়ে চরম অব্যবস্থাপনায় ভুক্তভোগী হয়েছেন ভক্ত-সমর্থকরা।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

এ বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন