ঢাকা      সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২
শিরোনাম

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ১০ জুলাই

IMG
07 July 2025, 3:00 PM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১০ জুলাই তারিখ ধার্য করা হয়েছে। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ এ তারিখ ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন: বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আসামি। আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। তাঁদের পক্ষে আমির হোসেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী।

অভিযোগ গঠন বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে অব্যাহতির আবেদন করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। শুনানিতে আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত অপরাধের সঙ্গে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাঁরা সম্পূর্ণ নির্দোষ ও নিরপরাধ।

আমির হোসেন বলেন, ২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড করেছেন। শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ দেননি। তাঁর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলায় সুপিরিয়র রেসপনসিবলিটির (সর্বোচ্চ দায়) অভিযোগ আনা হয়েছে। আসাদুজ্জামান খানও সুনামের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক ও কাল্পনিক।

শুনানিতে আমির হোসেন আরও বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ৩০ লাখ বাংলাদেশিকে হত্যা ও ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জত নষ্ট করা হয়েছিল। সে সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য এই আইন (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন) করা হয়েছে। ২০২৪ সালে দেশে কোনো যুদ্ধ হয়নি। এমন আন্দোলন আরও হয়েছে। তাই এ আইনে জুলাইয়ের মতো ঘটনার বিচার করা যায় না।

শুনানিতে আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের রাজাকারের নাতিপুতি বলেননি। তাঁর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনকারীদের লাশ কবর দিতে বাধা ও লাশে আগুন দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মনগড়া। যার কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই।

শুনানিতে আমির হোসেন আরও বলেন, রংপুরে আবু সাঈদকে হত্যার যে অভিযোগ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, তা–ও সত্য নয়। আবু সাঈদ হত্যায় তিনি মর্মাহত হয়েছিলেন। এমনকি তাঁর পরিবারকে ঢাকায় এনে শেখ হাসিনা সাহায্য করেছেন।

শুনানিতে আমির হোসেন বলেন, ‘রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয়জনকে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশে আগুন দেওয়ার ঘটনা শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর ঘটেছে। এসব অভিযোগও ভিত্তিহীন।’

এসব যুক্তির ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা থেকে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের অব্যাহতি চান রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।

মামলার অপর আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তাঁর আইনজীবী জানান, অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানিতে তিনি অংশ নেবেন না। আজ শুনানির পর ট্রাইব্যুনাল এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য তারিখ ধার্য করেন।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন