ঢাকা      বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
শিরোনাম

ফেনীতে তিন নদীর বেড়িবাঁধে ভাঙন, ২৫ গ্রাম প্লাবিত

IMG
09 July 2025, 12:35 AM

ফেনী, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় মুহুরী, কহুয়া এবং সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধে অন্তত ১১টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অন্তত ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফুলগাজী, পরশুরাম এবং ফেনী সদর উপজেলার অর্ধশতাধিক পরিবারের ১৩৩ জন আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন।

জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও উজানের পানির ঢলে এসব নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পায়। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার ওপরে বইছে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ছয়টি স্থানে ভাঙন হয়েছে। এর মধ্যে মুহুরী নদীর ফুলগাজী অংশে দু'টি ও সিলোনিয়া নদীর পরশুরাম অংশে চারটি। তিনি জানান, ভাঙন রোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

তবে উপজেলা প্রশাসনের হিসাবে, পরশুরাম ও ফুলগাজী মিলিয়ে মোট ১১টি স্থানে ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে। পরশুরামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান জানান, তাঁর উপজেলার মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর সাতটি স্থানে ভাঙন হয়েছে।

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিয়া ইসলাম বলেন, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের চারটি স্থানে ভাঙন হয়েছে। বন্যাকবলিতদের আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং সেখানে শুকনা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পরশুরামের মধ্যম ধনীকুন্ডা, নোয়াপুর, শালধর, পশ্চিম অলকা, জঙ্গলঘোনা, গদানগর, উত্তর মনিপুর, মেলাঘরসহ অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফুলগাজী উপজেলার পূর্ব রাঙ্গামাটিয়া, সাতকুচিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম অলকা, উত্তর ও মধ্যম ধনীকুন্ডা, মধ্যম মণিপুরসহ অন্তত ১০টি গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে।

পরশুরামের পশ্চিম অলকা গ্রামের বাসিন্দা মাসুম চৌধুরী বলেন, ‘সিলোনিয়া নদীর আলতাফ আলী চৌধুরীর বাড়ির পেছনের অংশে বেড়িবাঁধ ভেঙে সন্ধ্যার পর পানি আমাদের ঘরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা আতঙ্কে রাত পার করছি।’ উত্তর মণিপুর গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, ‘আমাদের এলাকায় প্রায় ৬০টি পরিবার পানিবন্দী। কেউ কেউ দোতলা ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।’

ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসমাইল হোসেন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জরুরি সভা হয়েছে। ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় ১৩১টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ফুলগাজীতে ৯৯টি ও পরশুরামে ৩২টি।

ইসমাইল হোসেন আরও জানান, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ফুলগাজীতে ৩৬টি পরিবারের ৮৫ জন, পরশুরামে ৫টি পরিবারের ২০ জন এবং ফেনী সদর উপজেলায় ৭টি পরিবারের ২৮ জন আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৪৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। এর আগে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জেলায় সর্বোচ্চ ৪৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি চলতি বর্ষা মৌসুমে সর্বোচ্চ। আজ বুধবারসহ আগামী দুই দিনও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন