ঢাকা      শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২
শিরোনাম

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

IMG
10 July 2025, 1:50 AM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সব ধরনের প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি সংক্রান্ত এক সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।

পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান। এ সময় নির্বাচন সংক্রান্ত আরও কিছু প্রস্তুতির কথা জানান উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

শফিকুল আলম বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সব প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে নিতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করতে বলেছেন তিনি’।

তিনি বলেন, প্রস্তুতির মধ্যে অনেকগুলো বিষয় আছে। যেমন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে (পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড) ১৭ হাজার নতুন সদস্য নেয়া হচ্ছে। তাঁদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ যেন এ সময়ের মধ্যে শেষ হয়, সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন।

শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে অনেক পাঁয়তারা হয়, তাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়। প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাতে নির্বাচন সামনে রেখে আগামী মাসগুলো কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করে।

বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, 'নির্বাচনের জন্য পর্যাপ্ত লোকবল আছে কি না, যদি নতুন নিয়োগ করতে হয়; তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া এখন থেকেই শুরু করে দিন। তাদের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করুন। প্রতিদিন ট্রেনিং হবে। ডিসেম্বরের মধ্যেই সকল প্রস্তুতি শেষ করতে হবে’।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, 'আগে যে ধরনের নির্বাচন হয়েছে, সেটা ছিল 'লোক দেখানো নির্বাচন'। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে সেজন্য একটা প্রকৃত নির্বাচন কী করে আয়োজন করতে হয়, সেটার ট্রেনিং দিতে হবে। কার কী ভূমিকা, সেটা পরিষ্কার থাকতে হবে। দরকার হলে রিহার্সাল নির্বাচন করতে হবে, যাতে অনুশীলন হয়।'

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৮ লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সব সদস্যকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে হবে।

এই ৮ লাখ সদস্যের মধ্যে ৫ লাখ ৭০ হাজার আনসার সদস্য এবং পুলিশ সদস্য থাকবে ১ লাখ ৪১ হাজার। তিনি আরও জানান, নির্বাচনের সময় ১৮-৩২ বছর বয়সী ভোটারদের আলাদা বুথ রাখা যায় কিনা- সে বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

শফিকুল আলম বলেন, ভোটের আগে যে কোনো ধরনের ভায়োলেন্সকে যেন প্রতিহত করা যায় এবং ভোটের পরেও আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি যাতে ঠিক থাকে; সেটা নিয়েও যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে। এজন্য নির্বাচনের সময় ৭ দিন যাবৎ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে ডিসি, এসপি, ওসি, ইউএনওদের রদবদল করার কথা বলা হয়েছে।

প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচনকালীন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কীভাবে ও কোথায় কোথায় মোতায়েন হবে; এটা একটা ইস্যু। বর্ডার এরিয়াতে কীভাবে মোতায়েন হবে, সারাদেশের বিভিন্ন রকম ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে কীভাবে মোতায়েন হবে, কতোজন আনসার থাকবেন, কতোজন পুলিশ সদস্য থাকবেন, বিজিবি বা সেনাবাহিনী কীভাবে থাকবেন, স্ট্রাইক ফোর্স হিসেবে কীভাবে থাকবেন, সেগুলো নিয়ে এই মিটিংয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

১৬ হাজার ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে - বৈঠকে এমন আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন,এসব ভোটকেন্দ্রে কীভাবে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট পরিচালনা করা যায় - তার প্রস্তুতি নিতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রেস সচিব জানান, প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্র যেন সিসিটিভির আওতাভুক্ত থাকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশও দেন প্রধান উপদেষ্টা।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার জানান, শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন থাকাকালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে যেসব কর্মকর্তা প্রিজাইডিং ও পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের বাদ রেখে অন্য কর্মকর্তাদের দিয়ে নির্বাচন পরিচালনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনিসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন