ঢাকা      বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২
শিরোনাম

সিআইএকে ভেনেজুয়েলায় অভিযানের অনুমোদন দিয়েছেন ট্রাম্প

IMG
16 October 2025, 9:55 AM

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএকে ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নিকোলাস মাদুরোর সরকার।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে ট্রাম্প বলেন, আমি দুটি কারণে সিআইএকে অনুমোদন দিয়েছি। প্রথমত, ভেনেজুয়েলা তাদের কারাগারগুলো খালি করে সব বন্দিকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে। দ্বিতীয় কারণ, মাদক। অনেক মাদক আসে ভেনেজুয়েলা থেকে, বিশেষ করে সমুদ্রপথে। এবার আমরা স্থলপথেও তা বন্ধ করবো।

একজন সাংবাদিক জানতে চান, এই অভিযানের লক্ষ্য কি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে উৎখাত করা? জবাবে ট্রাম্প বলেন, এটা আমার উত্তর দেওয়ার মতো প্রশ্নই নয়, এটা কতটা হাস্যকর প্রশ্ন ভাবুন তো।

এদিকে, বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মাদুরো বলেন, না হবে কোনো সরকার পরিবর্তন, না হবে সিআইএ-নিয়ন্ত্রিত কোনো অভ্যুত্থান। আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া- এসব ব্যর্থ যুদ্ধের পুনরাবৃত্তি আমরা চাই না। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে বলি- আমরা যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই।

এর আগে মাদুরো রাজধানী কারাকাসের পেতারে ও পার্শ্ববর্তী মিরান্দা রাজ্যে সামরিক মহড়ার নির্দেশ দেন। টেলিগ্রামে দেওয়া বার্তায় তিনি জানান, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বেসামরিক মিলিশিয়াকে তেলসমৃদ্ধ দেশটির প্রতিরক্ষায় প্রস্তুত করা হচ্ছে।

ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের যুদ্ধবাজ ও উসকানিমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। সিআইএ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক মোতায়েন স্পষ্টতই আগ্রাসন, হুমকি ও হয়রানির নীতি।

গত কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে অন্তত পাঁচটি সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌযানে হামলা চালিয়েছে, যেখানে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এসব অভিযানের বর্ণনা দিয়েছেন ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে।

হোয়াইট হাউজে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন ‘স্থলভাগেও নজর দিচ্ছে’, যাতে ওই অঞ্চলের মাদকচক্রের বিরুদ্ধে আরও অভিযান চালানো যায়।

গত বছর বিতর্কিত নির্বাচনের পর বৈশ্বিকভাবে ‘বৈধতা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ’ মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি বাড়ায় কারাকাসে সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের এই অনুমোদন সিআইএকে ভেনিজুয়েলায় এককভাবে বা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে গোপন অভিযান চালানোর ক্ষমতা দেয়। যদিও সিআইএ এরই মধ্যে কোনো অভিযান শুরু করেছে কি না, তা নিশ্চিত নয়। তবে দক্ষিণ আমেরিকায় সংস্থাটির দীর্ঘদিনের কর্মকাণ্ডের ইতিহাস রয়েছে।
সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্রের এক অভিযানে মঙ্গলবার ভেনেজুয়েলার উপকূলে এক নৌকায় হামলায় ছয়জন নিহত হন। নিজের ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে ট্রাম্প দাবি করেন, গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, নৌযানটি মাদক পাচারে জড়িত ছিল ও এটি একটি পরিচিত মাদক চোরাচালানের পথে চলাচল করছিল।

তবে মার্কিন কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট মাদকচক্রের নাম প্রকাশ করেননি কিংবা নিহতদের পরিচয়ও জানাননি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এরই মধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে আটটি যুদ্ধজাহাজ, একটি পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন ও কয়েকটি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছেন। হোয়াইট হাউজের ভাষ্য, এটি মাদক পাচার দমনের অংশ।

সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসে পাঠানো একটি গোপন নথিতে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, তারা এখন মাদকচক্রগুলোর সঙ্গে একটি অ-আন্তর্জাতিক সশস্ত্র সংঘাতের অবস্থায় রয়েছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন যে, মাদুরো নিজেই ‘কার্টেল অব দ্য সানস’ নামের একটি সংগঠনের অংশ, যেখানে ভেনেজুয়েলার উচ্চপদস্থ সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জড়িত। তবে মাদুরো এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সূত্র: বিবিসি

বাংলাদেশ গ্লোবাল/এমএস

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন