ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে শনিবার বিকেলে লাগা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড প্রায় ২৭ ঘণ্টা পর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ও মেনটেইন্যান্স শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘শনিবার আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা একে একে ৩৭টা ইউনিট এখানে অক্লান্ত পরিশ্রম করে, শনিবার রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। আমরা ৪টা ৫৫ মিনিটে (রোববার) এটা সম্পূর্ণ নির্বাপণ ঘোষণা করেছি।’
আগুন নেভাতে এত সময় লাগার কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, কার্গো ভিলেজের যেখান থেকে আগুনের ঘটনা ঘটেছে সেখানে যদি অগ্নি সতর্কতার (ফায়ার ডিটেকটেড সিস্টেম) থাকতো; তাহলে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটত না। যে কারণে আগুন নেভাতেও বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে। স্টিলের পরিমাণ বেশি থাকায় তাপ বেশি ধারণ করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এটা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এখানে টেম্পারেচার (তাপমাত্রা) অনেক হাই (বেশি) ছিল। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে এখানে আগুন জ্বলেছে। এত টেম্পারেচার কোনো সাধারণত কনস্ট্রাকশন ধরে রাখতে পারে না। এজন্য আমরা ভেতরে দেখেছি, বেশ কিছু ফাটল ধরেছে, কলামেও ফাটল ধরেছে। এটা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ, তবে অতটা ঝুঁকিপূর্ণ নয়। আমরা যেহেতু কাজ করেছি, বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হলে আমরা হয়ত ভেতরে ঢুকতাম না। আশা করি, ভবন কর্তৃপক্ষ অবশ্যই জরিপ করে বের করবেন যে ভবনটি কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ।’
ফায়ার সার্ভিসের এই পরিচালক বলেন, ‘এর ভেতরে ফাটল ধরেছে। কেমিক্যালের কারণে কিছুটা পরিবেশের ঝুঁকি থাকে, তবে অতটাও নয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ারের দু'জন আহত হয়েছেন।’
আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ হলেও ফায়ারের ৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে অবস্থান করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ওখানকার স্টোরটি খুবই সংকীর্ণ ছিল। অনেক দাহ্য জিনিস ছিল, এজন্যই দেরি হয়েছে।’
শনিবার দুপুর সোয়া ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে আমদানি কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। আগুন লাগার পর তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং কমপ্লেক্সের তিনটি অংশের মধ্যে দু'টি অংশ পুড়িয়ে ফেলে। পরে ৮ নম্বর গেট সংলগ্ন রাসায়নিক গুদাম পর্যন্ত আগুন পৌঁছে যায়।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, শনিবার রাত ৯টার পর থেকে ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়। ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাদের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৩৭ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের দুই কর্মী, ২৫ জন আনসার সদস্য ও বিভিন্ন সংস্থার আরও ১০ জন রয়েছেন। বিমানবন্দরের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ এই ঘটনায় সৌভাগ্যবশত কোনো বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটেনি।
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com