ঢাকা      সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২
শিরোনাম

ড্যাফোডিল-সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, থমথমে অবস্থা

IMG
27 October 2025, 1:37 PM

শরীফুল ইসলাম, সাভার: ঢাকার সাভারে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সিটি ইউনিভার্সিটির বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর হয়েছে। দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে দাবি দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের। রোববার দিবাগত রাতে আশুলিয়ার খাগান এলাকায় দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

শিক্ষার্থীরা জানান, রোববার সন্ধ্যার পর ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসা 'ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেল'-এর পাশে বসেছিলেন সিটি ইউনিভার্সিটির কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় তাদের একজন থুতু ফেললে তা সেখান দিয়ে মোটর সাইকেলে যাচ্ছিলেন - এমন এক ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীর গায়ে পড়ে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের ভাড়া করা ওই বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।

এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। একপর্যায়ে তারা সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে অগ্রসর হন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তখন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। তারা সিটি ইউনিভার্সিটির প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

এরই মধ্যে সিটি ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন এলাকায় পৃথক একটি স্থানে শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। পরে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়েন। এ সময় ক্যাম্পাসে দাঁড় করিয়ে রাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি বাস, একটি প্রাইভেট কারে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া একটি বাস, দুইটি প্রাইভেট কার, একটি মোটর সাইকেল, প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর চলে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, অসর্তকতাবশতই সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ফেলা থুতু ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীর শরীরে লাগে। সেখানে `সরি' বললে বিষয়টি সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু রাতে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের মেসে ভাঙচুর চলে। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদেরই সন্তান, আমাদের শিক্ষার্থী। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের।

ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির প্রক্টর শেখ মুহাম্মদ আলিয়ার বলেন, এখনো আমাদের ৯ জন শিক্ষার্থীকে সিটি ইউনিভার্সিটিতে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের। এ ঘটনায় ড্যাফোডিলের প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

সিটি ইউনিভার্সিটির প্রক্টর অধ্যাপক আবু জায়েদ বলেন, ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, সেটি সম্পর্কে এখনো আমরা নিশ্চিত নই। ছাত্রদের মারামারি থেকে ক্যাম্পাস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা হতে পারে না। এটি পরিকল্পিত। আমাদের শিক্ষার্থী আহতের সংখ্যা আনুমানিক অর্ধশতাধিক হতে পারে।

দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ শিক্ষার্থী সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানান এনাম মেডিকেলের ডিউটি ম্যানেজার ইউসুফ আলী। তিনি বলেন, প্রত্যেককেই সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসা চলছে।

সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) হেলাল উদ্দিন বলেন, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। কোনো গ্রেপ্তার নেই।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

এ বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন