ঢাকা      সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
শিরোনাম

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলায় সুনির্দিষ্ট ৫ অভিযোগ

IMG
17 November 2025, 12:01 PM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল : চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় পলাতক আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রথম অভিযোগ:
২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ ও ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ উল্লেখ করে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন হাসিনা। এর প্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান খান, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ-নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়। গুলি করে হত্যা করা হয় দেড় হাজার মানুষকে। ওই সময় আহত হন প্রায় ২৫ হাজার।

দ্বিতীয় অভিযোগ:
হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে সেই নির্দেশ কার্যকর করেন। গত বছর ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য এএসএম মাকসুদ কামাল এবং ১৮ জুলাই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে কথা বলেন শেখ হাসিনা। কথোপকথনের অডিও রেকর্ড থেকে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোকে মারণাস্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।

হাসিনার সেই নির্দেশ তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির মাধ্যমে সব বাহিনীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও তার অন্যান্য অঙ্গসংগঠন এবং ১৪-দলীয় জোটের কাছেও এই নির্দেশ পাঠানো হয়। সেই নির্দেশের আলোকে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়। এর দায়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির (সর্বোচ্চ দায়) আওতায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

তৃতীয় অভিযোগ:
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

চতুর্থ অভিযোগ:
রাজধানীর চানখাঁরপুলে আন্দোলনরত নিরীহ-নিরস্ত্র ৬ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায়ও হাসিনার পাশাপাশি ওই দুজনকে অভিযুক্ত করা হয়।

পঞ্চম অভিযোগ:
হাসিনা, আসাদুজ্জামান ও মামুনের বিরুদ্ধে আশুলিয়ায় নিরীহ-নিরস্ত্র ৬ জনকে আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনায়ও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এ মামলায় রায় ঘোষণা করবেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ শাস্তির আর্জি পেশ করেন।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সুবিবেচনা ও প্রজ্ঞা প্রয়োগ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, জাতির বিচারের জন্য যে আকাঙ্ক্ষা ও তৃষ্ণা সেটার প্রতি তারা সুবিচার করবেন। দৃষ্টান্তমূলক রায় প্রত্যাশা করেন চিফ প্রসিকিউটর।

রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের খালাস প্রার্থনা করেন।

এ মামলার অধিকাংশ শুনানি সরাসরি বিটিভিতে সম্প্রচার করা হয়েছে। অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। গত ১০ জুলাই এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে সাবেক আইজিপি মামুনের রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন।

ব্রেকিং নিউজ, এই মুহূর্তের খবর, প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর, লেটেস্ট নিউজ এবং গুরুত্বপূর্ণ আপডেট নিউজ পেতে ভিজিট করুন www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন