ঢাকা      মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
শিরোনাম

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী এসেছিলেন বোরকা পরে, বেরিয়ে যান স্কুল ড্রেস গায়ে

IMG
09 December 2025, 1:23 AM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে বহুতল ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে এক গৃহবধূ ও তাঁর মেয়ের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে মরদেহ দু'টি উদ্ধার করা হয়। বাসাটির অবস্থান শাহজাহান রোডে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের বিপরীত পাশের আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায়।

নিহতরা হলেন: মা লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)। নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। তার বাবা আজিজুল ইসলাম রাজধানীর একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন।

পুলিশের ধারণা, এ হত্যাকাণ্ডে গৃহকর্মী (২০) জড়িত। ঘটনার পর থেকে ওই গৃহকর্মী পলাতক। ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, ওই গৃহকর্মী বোরকা পরে বাসায় এসেছিলেন। বেরিয়ে যাওয়ার সময় তার পরনে ছিল নিহত নাফিসার স্কুল ড্রেস।

নাফিসার গলায় একাধিক গভীর ক্ষত এবং লায়লার শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের ধারণা, হাতে গ্লাভস পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মা-মেয়েকে আঘাত করা হয়েছে।

ওই বাসার একটি আলমারির জিনিসপত্র এলোমেলো পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মো. খালেক নামে ভবনটির একজন নিরাপত্তা কর্মীকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, আজিজুল ইসলাম সকালে স্কুলে গিয়েছিলেন। তিনি সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাসায় এসে স্ত্রী-সন্তানের মরদেহ দেখতে পান। আজিজুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাসায় ফিরে দরজা খোলার জন্য কলিং বেলে চাপ দেই। কিন্তু ভেতর থেকে কেউ দরজা খোলে না। জোরে ধাক্কা দিলে দরজা খুললে মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েকে দেখতে পাই। পুরো ঘর রক্তে ভিজে আছে। আর রান্নাঘরের পাশে স্ত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তখনো মেয়েটি বেঁচে ছিল।’

আজিজুল ইসলাম জানান, ভবনের তত্ত্বাবধায়ক ও নিরাপত্তা কর্মীদের মাধ্যমে চার দিন আগে ওই গৃহকর্মীকে কাজে নেন। সকালে এসে বাসার কাজ করে চলে যেত। এর মধ্যে সোমবার বাসার মূল দরজার চাবি হারিয়ে যায়। সন্দেহ হলেও গৃহকর্মীকে কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়নি।

আজিজুল বলেন, ‘মেয়েটির পরিচয় ও ফোন নম্বর চেয়েছিলাম। কিন্তু সে বলেছিল, আগুনে পুড়ে তার মা–বাবা মারা গেছে। সে-ও আগুনে দগ্ধ হয়েছিল। এসব বলে পরিচয় ও ফোন নম্বর দেয়নি।’

আজিজুলের গ্রামের বাড়ি নাটোর সদর উপজেলায়। ২০১২ সাল থেকে তিনি পরিবার নিয়ে বহুতল ভবনটির অষ্টম তলায় নিজের ফ্ল্যাটে থাকতেন। ময়নাতদন্ত শেষে মা-মেয়ের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন।

মা-মেয়ের লাশ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সংস্থার একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ওই বাসা থেকে রক্তমাখা একটি ছোরা ও একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।

বাসার একটি বাথরুমের পাশে একটি প্লাস্টিকের পাত্রের মধ্যে ওই ছোরা ও চাকু ছিল জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড মনে হচ্ছে। ঠান্ডা মাথায় মা-মেয়েকে হত্যার পর বাথরুমে গিয়ে শরীর ধুয়ে ওই গৃহকর্মী বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে।’

ব্রেকিং নিউজ, এই মুহূর্তের খবর, প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর, লেটেস্ট নিউজ এবং গুরুত্বপূর্ণ আপডেট নিউজ পেতে ভিজিট করুন www.bangladeshglobal.com

এ বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন