স্পোর্টস ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: কয়েকদিন আগেই ইংল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করে সিরিজ জেতা দলটা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও শুরুটা করলো দুর্দান্ত। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে পাহাড়সম রান তোলে তামিম ইকবালের দল। বোলিংয়েও সেই ধারা বজায় রাখেন এবাদত হোসেন-নাসুম আহমেদরা। আর তাতে বড় জয়ের পাশাপাশি নতুন রেকর্ড গড়েছে টাইগাররা।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শনিবার (১৮ মার্চ) আয়ারল্যান্ডকে ১৮৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করে সাকিব আল হাসান ও তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটে ৩৩৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৫৫ রানে থামে আইরিশদের ইনিংস।
বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে রানের ব্যবধানে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৬৯ রানের জয়টা। এবার সেই আইরিশদের আরও বড় ব্যবধানে হারানোর রেকর্ড গড়লেন তামিম-সাকিবরা।
৩৩৯ রানের লক্ষ্যে শুরুটা ভালোই করেছিল আয়ারল্যান্ড। তবে পাওয়ার প্লে শেষে প্রথম উইকেট হারানোর পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে আইরিশদের ব্যাটিং লাইন।
বাংলাদেশের হয়ে প্রথম আঘাতটা হানেন সাকিব। দ্বাদশ ওভারে আইরিশ ওপেনার স্টিফেন ডোহানিকে ফেরান তিনি। পরের ওভারে মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত ক্যাচে পল স্টার্লিংকে ফেরান ইবাদত।
ইবাদতের পরের ওভারে আবারও উইকেট। এবার আইরিশ টপ অর্ডার ব্যাটার হ্যারি টেক্টরকে সুইংয়ে পরাস্ত করেন তিনি। আর প্রথম স্পেলের পর ১৬তম ওভারে বোলিংয়ে এসেই আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু ব্যালবার্নিকে বোল্ড করেন তাসকিন আহমেদ।
পরের ওভারে আবারও তাসকিনের চমক। এবার ডানহাতি পেসারের বাউন্সার খেলতে গিয়ে স্লিপে কাটা পড়েন লরকান টাকার। আইরিশ ইনিংসের ২৭তম ওভারে জোড়া উইকেট শিকার করেছেন নাসুম আহমেদ। ওভারের পঞ্চম বলে ডিলানিকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলার পর পরের বলেই ম্যাকব্রাইন হন কট বিহাইন্ড।
নিজের করা আগের ওভারেও ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন নাসুম। ১৬ রান করা কার্টিস ক্যাম্ফারকে এলবিডব্লিউ করেন তিনি। তবে একপাশে উইকেট হারানোর মিছিল চললেও একাই লড়েছেন জর্জ ডকরেল। ৪৭ বলে ৪৫ রান করে ইবাদতের বলে তিনি ফিরলে ১৫৫ রানে থামে আয়ারল্যান্ডের ইনিংস।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট নিয়েছেন ইবাদত হোসেন। নাসুমের ঝুলিতে গেছে তিন উইকেট। বাকি তিন উইকেটের মধ্যে দু'টি পেয়েছেন তাসকিন আর একটি গেছে সাকিবের ঝুলিতে।
এর আগে, টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই তামিম ইকবালের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মার্ক অ্যাডায়ারকে খেলতে গিয়ে বাংলাদেশ দলপতি ক্যাচ দেন পল স্টার্লিংকে। ৯ বলে মাত্র ৩ রান করেন তামিম। তামিমকে হারানোর পর লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে এগিয়ে যাচ্ছিল টাইগার শিবির। দলীয় স্কোর অর্ধশতক পূর্ণ হওয়ার ঠিক আগে বিদায় নেন লিটন। ৩১ বলে তিনি করেন ২৬ রান। লিটনকে স্টার্লিংয়ের ক্যাচ বানান কার্টিস ক্যাম্ফার।
এরপর আবার নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব মিলে দৃঢ়তা আনেন। তাদের জুটি ভাঙে ৩২ রানের মাথায়। শান্ত আউট হন ব্যক্তিগত ২৫ রানে। ৩৪ বল খেলা শান্তকে বোল্ড আউট করেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। শান্ত যখন আউট হন, তখন বাংলাদেশের দলীয় রান ছিল ৮১। এরপর ক্রিজে আসেন হৃদয়। সাকিবের সঙ্গে তিনি গড়ে তোলেন ১৩৫ রানের জুটি।
সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে গিয়েও হতাশ করেন সাকিব আল হাসান। গ্রাহাম হুমের বলে ৯৩ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি। তাতে তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে তার ১৩৫ রানের জুটিও ভাঙে। হুমকে খেলতে গিয়ে লর্কান টাকারকে ক্যাচ দেন সাকিব। ৯৩ করতে ৮৯ বলে তিনি খেলেন ৯টি চারের মার। এ নিয়ে ক্যারিয়ারে পাঁচবার নব্বইয়ের ঘরে আউট হলেন সাকিব। এর আগে তিনবার টেস্টে ও একবার ওয়ানডেতে নব্বইয়ের ঘরে থাকতে বিদায় নেন তিনি।
সাকিব আউট হলেও বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন অভিষিক্ত হৃদয়। তাকে উপযুক্ত সঙ্গ দেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। আক্রমণাত্মক ঢংয়ে খেলতে থাকা মুশফিক-হৃদয়ের জুটি ভাঙে দলীয় ২৯৬ রানে। এ সময় মুশি আউট হন ব্যক্তিগত ৪৪ রানে। মাত্র ৪৯ বলে দু'জনে মিলে গড়েছিলেন ৮০ রানের জুটি। একই ওভারে বিদায় নেন অভিষেকে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা হৃদয়। তিন অঙ্কের ঘর থেকে মাত্র ৮ রান দূরে ছিলেন তিনি। ৮৫ বলে ৯২ রান করতে তিনি খেলেন ৮টি চার ও ২টি ছয়ের মার।
শেষ দিকে ইয়াসির আলি ১৭, তাসকিন ও নাসুম তোলেন ১১ রান করে। আয়ারল্যান্ডের হয়ে হুম নেন ৪ উইকেট। একটি করে উইকেট পান অ্যাডায়ার, ক্যাম্ফার ও ম্যাকব্রাইন।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এইচএম
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com