ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: "পরবর্তী স্টেশন মহাকরণ"। প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ স্থানীয় সময় সকাল সাতটায় প্রবল উচ্ছ্বাস ধ্বনি দিয়ে শুরু হলো যাত্রী নিয়ে গঙ্গার নীচ দিয়ে মেট্রো চলাচল। এক কথায় ভারতের প্রথম, যাত্রী নিয়ে নদীর তলা দিয়ে ছুটে গেলো মেট্রো। ঠিক সাতটা তিন মিনিটে মেট্রো পৌঁছে গেল মহাকরণ এবং ঠিক তার দুই মিনিটের মাথায় প্রবল উচ্ছ্বাস, আনন্দে ফেটে পড়লেন যাত্রীরা।
মেট্রো তখন গঙ্গার নিচে। গঙ্গার পানি স্তরের নিচে সুড়ঙ্গ কেটে তৈরি হয়েছে মেট্রোর পথ। যাত্রীদের কাছে "নদীর নিচে মেট্রো" বিষয়টি আরও স্পষ্ট করতে কয়েক সেকেন্ডের টানেলে কাঁচের বাইরে দু"দিকে নীল আলোক সজ্জা। যেন তাঁরা যাচ্ছেন একেবারে পানির মাঝখান দিয়েই। চিৎকার, উচ্ছ্বাস সবার!
২০০৯-এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, ২০১৭ সালে শুরু হয় কাজ। নানা প্রতিবন্ধকতার পেরিয়ে কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত ৬ মার্চ এই লাইনের উদ্বোধন করেন। ১৫ মার্চ প্রথমবার যাত্রী নিয়ে শুরু হলো চলাচল। মেট্রো চলাচল শুরুর আগে থেকেই স্টেশনের বাইরে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কেউ এসেছেন রাত আড়াইটা, কেউ বা ভোর চারটায়। কেউ সোদপুর থেকে এসেছেন, কেউ বনগাঁ থেকে। তাঁরা সাক্ষী থাকতে চেয়েছিলেন গঙ্গা দিয়ে সে মেট্রো ছুটে যাবে, তার প্রথম সওয়ারি হওয়ার।
বিশ্বজিৎ রায়, পেশায় চিকিৎসক। ভোর বেলা ছুটে এসেছেন তিনি বারুইপুর থেকে, অন্যদিকে বনগাঁ থেকে এসেছেন ভারতী রায়, তিনি আবার অফিস কেটে এসেছেন এই বিশেষ মুহূর্তের সাক্ষী হতে। ৮২ বছরের, তাঁর নেশা, যে কোন ট্রেন, মেট্রোর প্রথম সওয়ারি হওয়ার। সোদপুর থেকে নাতিকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন তিনি ধর্মতলায়।
এশিয়ার প্রথম নদীর তলা দিয়ে যে মেট্রো ছুটবে, তাতে সওয়ারি হয়ে সাক্ষী হলেন তিনি। মেট্রোর প্রথম যাত্রী কে হলেন? তা নিয়েও কিন্তু বেশ কৌতূহল ছিল। সল্ট লেকের রাজীব রায়, রাত ২.৩০ টা থেকে হাজির ছিলেন ধর্মতলায়। প্রথম টিকিট কাটলেন তিনি, মেয়েদের মধ্যে প্রথম টিকিট কাটলেন ভবানীপুরের উপাসনা ঘোষ। ট্রেন চলতে শুরু করার পর থেকেই মূহূর্মুহু উচ্ছাসে ফেটে পড়েন সকলেই। ধর্মতলা থেকে হাওড়া ময়দান, মোট চাীটি স্টেশন পেরোতে সময় লাগলো ১০ মিনিট।
সড়ক পথে যে পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট। সেই রাস্তা ১০ মিনিটে যাওয়ায় ভীষণ খুশি নিত্য যাত্রীরা। অনেকেই জানালেন, এবার তাঁরা সেই পথেই যাতায়াত করবেন।
কলকাতা মেট্রোর সিপিআরও কৌশিক মিত্র কার্যতই খুশি। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান মুহূর্তে জানালেন, "চ্যালেঞ্জিং ছিল, কলকাতার মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণ হলো। কলকাতার মানুষ এবার শুধু রসগোল্লার জন্য গর্ব করবেন না, গঙ্গার নিচে দিয়ে চলা মেট্রো রেল নিয়েও গর্ব করবেন। খুব কম খরচে মানুষের জন্য সুগম যাতায়াত ব্যবস্থা শুরু হলো। কলকাতা মেট্রো দেশবাসীর জন্য।" প্রথম মেট্রোয় সওয়ার হলেন ৫০০-এর বেশি যাত্রী।
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com