ঢাকা      মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
শিরোনাম

সমগ্র জাতি আজ ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন: ফখরুল

IMG
05 April 2024, 9:40 PM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: কোনো দল, কোনো ব্যক্তি বা শুধু পেশাজীবীরা নয়— সমগ্র জাতি আজ এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, 'সাবেক এক প্রধান বিচারপতি (এস কে সিনহা) তাঁর বইয়ে লিখেছিলেন, একটা মনস্টার (দানব) সব দখল করে নিয়েছে, তছনছ করে ফেলছে। প্রকৃতপক্ষে আজকে সেটাই হয়েছে।'

আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন(ডিইউজে)-এর একাংশের ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, 'একটি ভয়াবহ দৈত্য সব আক্রোশ নিয়ে আজকে পুরো বাংলাদেশকে তছনছ করে ফেলেছে। গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে।'

দেশের জনগণ যাদের ওপর আস্থা রাখে, সেই গণমাধ্যমকে প্রথমেই আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, 'যারা স্বাধীনভাবে লিখতে চান, তাঁদের সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন আইনে গ্রেপ্তার করা হয়, তুলে নেওয়া হয়, এমনকি নির্যাতন করে মেরেও ফেলা হয়। ফ্যাসিবাদ যখন তার সর্বশক্তি নিয়ে আক্রমণ করে, তখন এই গণমাধ্যমও রেহাই পায় না।’

মির্জা ফখরুলের মতে, ‘মনে হয় পুরোপুরিভাবে একটি আধিপত্যবাদ, একটা ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ আমাদের ওপর চেপে বসে আছে।’ এর বিরুদ্ধে বাম ও ডান সব ধরনের দলকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি যখন আন্দোলন শুরু করেছিল, সেই সময় গত বছরের ২৮ অক্টোবরের সমাবেশে পুলিশ ‘ন্যক্কারজনকভাবে’ হামলা করে পণ্ড করে দেয় বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, এতে আন্দোলন নস্যাৎ হয়ে যায়নি। অনেকে মনে করেন বিরোধী দলের আন্দোলন নস্যাৎ হয়ে গেছে। কখনোই না। বিএনপি মহাসচিবের দাবি, তাঁদের আন্দোলন আরও শক্তিশালী হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মনে রাখতে হবে ধীরে ধীরে কিন্তু ইটের পর ইট বসে একটা স্তম্ভ গড়ে উঠছে। সেখানে অবশ্যই তাদের (বর্তমান সরকার) পরাজয় হবেই।’

ফিলিস্তিনে নৃশংস গণহত্যা চালানোর পর ইসরাইল এখন সেখানে খাদ্য সহায়তা বন্ধ করে দিয়ে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘আমি এই সময়ে স্মরণ করছি ফিলিস্তিনের ভাইদের কথা, যারা এই রমজান মাসে অন্যায়ভাবে ইসরাইলের নারকীয় গণহত্যার শিকার হচ্ছে। এই রমজানে তারা ক্ষুধায় কাঁদছে, খাদ্য পাচ্ছে না, দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। কতো নৃশংস হতে পারে যে একটা জনপদ সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার পর তারা যাতে বেঁচে থাকতে না পারে, এখন খাদ্য সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

ফিলিস্তিন ইস্যুতে যেভাবে বিশ্বমত গড়ে ওঠা উচিত ছিল, সেভাবে গড়ে ওঠেনি বলে মনে করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আরও দুঃখের কথা, মুসলিম বিশ্ব—যারা সব সময় মুসলমানদের পাশে আছে, তারাও সেভাবে জোরালো কোনো প্রতিবাদ করেনি। এটা মানবতার দাবি, আজকে ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে দাঁড়ানো। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানো প্রত্যকের দায়িত্ব-কর্তব্য।’

ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একটি চরম কঠিন সময় অতিক্রম করছে। আজকে শহরে, গ্রামে-বন্দরে এখনো নিরন্ন মানুষের হাহাকার চলছে। সরকার একদিকে উন্নয়নের ফানুস উড়িয়ে, অন্যদিকে ঋণ করে ঋণ পরিশোধ করার এক নজিরবিহীন সংকট সৃষ্টি করে দেশের কৃষক-শ্রমিকের ঘাম ঝরানো অর্থনীতির প্রাণশক্তিকে ফোকলা করে ফেলেছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসগুলোতে অশান্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম খান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিএফইউজের সাধারণ সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম এসময় উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন