ঢাকা      শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
শিরোনাম

বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষ, আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

IMG
10 June 2024, 6:48 PM

মো. ইউনুস, বাংলাদেশ গ্লোবাল: বড়ির আঙিনা, বাড়ির ছাদ, অনাবাদি ও পতিত জমিসহ বিভিন্ন জায়গায় বস্তায় মাটি ভরে বাণিজ্যিকভাবে মসলা জাতীয় ফসল আদা চাষে নতুনভাবে স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।

স্বল্প জায়গায়, অল্প সময়ে, কম খরচে চার গুণ লাভ পাওয়ায় টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার কৃষকরা আদা চাষে ঝুঁকছেন। উদ্যানতত্ত্ববিদ ও কৃষি কর্মকর্তারাও নানা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন লাভজনক এই পদ্ধতি আদা চাষে।

স্থানীয় চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সীমিত খরচ, কম জায়গা আর অল্প শ্রমে বস্তায় মাটি-সার ভরে আদা চাষ করা যায়। আদা গাছে পানির চাহিদা কম। রোগবালাই নেই বললেই চলে। সার বা কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় সীমীত। বস্তা সহজে বহণের ফলে বন্যায় ক্ষতি হয় না। আদা বিক্রিতে কোনো ঝামেলা না থাকায় আদা চাষ করে অতিরিক্ত অর্থ পাচ্ছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস ও উদ্যানতত্ত্ববিদ কার্যালয় (হর্টিকালচার সেন্টার) ধনবাড়ী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ৩’শত জন কৃষক প্রণোদনার আওতায় ও ব্যাক্তিগত উদ্যাগে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় মাটি-সার ভরে আদা চাষ শুরু করছেন। প্রণোদনায় আওতায় বস্তা, আদা বীজ, সার ও কীটনাশক দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। চৈত্র-বৈশাখ মাসে আদা বীজ বপন করলে পৌষ-মাঘে উত্তোলন করা যায়। একটি বস্তায় ৭০-৮০ গ্রাম আদার বীজ বপন করা হয়। জাত ভেদে বস্তা প্রতি ১-৩ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।

বাড়ির আঙিঙ্গনায় বস্তাতে আদার গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত ধনবাড়ী বাজার এলাকার কৃষক মো. ইয়াহুদ আলী তালুকদার। তিনি বলেন, ‘৫০২ বস্তায় আদাসহ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১০ শতক জমিতে আদা চাষ করেছি। গত বছর ফলন ভালো পেয়েছি। আশা করি এবারও ফলন ভালো হবে। প্রতি কেজি আদার বাজার মূল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। তবে ছায়াযুক্ত জায়গায় ফলন ভালো হয়।’

কৃষি অফিসের পরামর্শে বাড়ির আঙিনায় ও পুকুর পাড়ের পরিত্যক্ত জায়গায় আদা চাষ শুরু করছেন মুশুদ্দি এলাকার কৃষক আল-আমিন। তিনি বলেন, ‘আদা চাষে প্রণোদনায় আওতায় ৪’শত বস্তা, বীজ-সার ও কীটনাশক পেয়েছি। এই পদ্ধতিটা একেবারেই নিরাপদ। বুঝেশুনে বস্তায় আদা চাষ করলে ব্যাপক লাভের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান এই কৃষক।’

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘বস্তায় আদা চাষ অত্যন্ত লাভজনক। মসলার উন্নত জাত প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রদর্শনী প্রকল্প-এর উদ্যোগ নিয়েছে। অন্য কৃষকদের মধ্যে এটি সম্প্রসারিত হলে এলাকায় মসলা উৎপাদন আরও সমৃদ্ধ হবে।’

বস্তায় আদা চাষে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানান ধনবাড়ী হর্টিকালচার সেন্টার কার্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ববিদ মো. রাসেল পারভেজ তমাল। তিনি বলেন, ‘ধনবাড়ী, মধুপুর, গোপালপুর, ভুয়াপুর ও ঘাটাইল উপজেলাগুলো নিয়ে হর্টিকালচার সেন্টার কাজ করে আসছে। এই পাঁচ উপজেলার কৃষকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বস্তায় হলুদ চাষেও উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘উচ্চ ফলনশীল আদার বীজ সংগ্রহে আমরা ২ হাজার বস্তায় আদার বীজ বপন করেছি। যাতে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া যায়।’

ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘পরিত্যক্ত জায়গা ও বাড়ির পাশে মসলা জাতীয় ফসল আদা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। বস্তায় আদা চাষে অল্প খরচে লাভবান হবে কৃষক। কৃষকদের আদা চাষে সকল প্রকার সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

বাংলাদেশ গ্লোবাল/এমএন

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন