ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ঢাকার সাভারে আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সোমবার (৫ আগস্ট) থেকে মঙ্গলবার (৬ আগষ্ট) বিকাল পর্যন্ত স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতাল ও নিহতের স্বজনদের কাছ থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, আশুলিয়া থানার সামনের মহাসড়কে পদচারী সেতুতে সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দুই ব্যক্তির মরদেহ দুই পা বেঁধে উল্টো করে ঝুলানো ছিলো। সকালে মরদেহ দুটি নিচে নামানো হয়। মরদেহ দুটির মুখ থেঁতলে দেয়া হয়েছে। পিকআপে ২ জনকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। থানার সামনেও একটি লাশ পড়ে আছে। তার শরীরেও আগুন দিয়েছিলো। লাশগুলো পুলিশ সদস্যদের হতে পারে বলে ধারণা করা যায়।
এ ব্যাপারে কথা বলতে বিকেল ৪ টার দিকে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানসহ সাভারে দায়িত্বরত পুলিশের উর্দ্বতন তিনজনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে গতকাল ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান বলেছিলেন, আমাদের তিনটি থানায় ভাংচুর করে আগুন দেওয়া হয়েছে। লুটপাট হয়েছে। কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে বলেও আমাকে জানানো হয়েছে। সে ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়ার চেষ্টা চলছে।
বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, গতকাল দিনব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনার পর মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যু নথিভুক্ত করেছেন তারা।
নিহতরা হলেন, রমজান , মোজাহিদ, নাফিসা, তৌহিদুর রহমান, সাফোয়ান, রাসেল, রফিক, নিসান, মুন্না, সজিব, রানা, আলামিন, সাজ্জাদ, লালমিয়া ও কাউয়ুম। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সাভারের বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক মো. ইউসুফ বলেন, হাসপাতালে আজ দুপুর ৩ টা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৫ জন। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি ৩-৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
গতকাল সংঘর্ষের সময় সাভারের পাকিজা এলাকায় শ্রাবণ গাজী (২১) নামের একজন নিহত। শ্রাবণ গাজির পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি নিহত হন।
সাভারে গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সমন্বয়ক গোলাম রহমান শাহজাহান বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে গতকাল ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। কারো মাথায়,কারো পেটে গুলি লেগেছে। এখন পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় আহত চিকিৎসাধীন রয়েছে কয়েকজন।
আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপক হারুন অর রশীদ বলেন, গতকাল তিনজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। এরমধ্যে একজনের নাম স্বপন প্রমাণিক (২০), জাহিদুর রহমান (২৫)। অপর একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদের শরীরে গুলি লেগেছে।
আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় হাবীব হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. রাসেল মিয়া বলেন, সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেলে ৫ জনের মরদেহ হাসপাতালের সামনে আনা হয়। কিছুক্ষণ পর ৪ জনের পরিবারের সদস্যরা মরদেহ সেখান থেকে নিয়ে যান। পরে ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য অন্য কোনো হাসপাতালে নেয়া হয়েছে কিনা জানিনা। তবে অজ্ঞাত একজনের মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com
