ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: গোপালগঞ্জে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শওকত দিদারের মৃত্যুর ঘটনায় নিন্দা, ক্ষোভ ও শোক জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানীর গাড়ি বহরে হামলা করা সন্ত্রাসী কাজ। জিলানীসহ তার সহধর্মিনী গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্না ও তাদের দুই ছেলে এবং গাড়ীবহরের নেতাকর্মীদের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়ে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শওকত আলী দিদারকে খুন করা ও অনেক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করার ঘটনা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ।
স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব।
আজ শুক্রবার রাতে দলটির সহ দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা হামলার আশঙ্কায় দীর্ঘদিন গোপালগঞ্জ জেলাধীন কোটালীপাড়া থানার অন্তর্গত পাটগাতিস্থ নিজ গ্রামে যেতে পারেননি জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল—কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী। আওয়ামী স্বৈরশাহীর পতনের পর আজ টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার পথে গোপালগঞ্জ সদর থানার গুনাপাড়া এলাকায় আওয়ামী দুস্কৃতিকারিরা এস এম জিলানীর গাড়ীবহরে বেপরোয়া হামলা চালিয়ে করেছে। হামলাকারীরা নেতাকর্মীদের বহনকারী গাড়ীবহরেও হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। হিংস্র সন্ত্রাসীদের কতৃর্ক এ ধরণের পৈশাচিক ও কাপুরুষোচিত রক্তাক্ত ঘটনায় দেশবাসী গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকারের পতন হলেও দেশে এখনো নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে পরাজিত শক্তির দোসররা। তারা গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। অবৈধ আওয়ামী শাসনামলে এই সন্ত্রাসীরা অনেক কালো টাকা উপার্জন করেছে, সেই কালো টাকা তারা এখন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কাজে লাগাচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীরা ছাত্র—জনতার ঐতিহাসিক বিজয়কে মেনে নিতে পারছে না বলেই দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর জন্যই বিএনপি এবং অন্যান্য সমমনা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ জনগণের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে খুন ও তাদেরকে গুরুতর জখম করা হচ্ছে।’
ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘গোপালগঞ্জে দুস্কৃতিকারিদের দ্বারা এস এম জিলানীর গাড়ীবহরে বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. শওকত আলী দিদারকে খুন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী সহ অনেক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করার ঘটনা একটি গভীর দেশী—বিদেশি চক্রান্তের বহিঃপ্রকাশ। এসব সন্ত্রাসীদের কঠোর হস্তে দমন করার কোনো বিকল্প নেই। হামলা ও রক্তাক্ত পথ অনুসরণ করে ষড়যন্ত্রকারীরা যাতে ফায়দা হাসিল করতে না পারে সেজন্য ছাত্র-জনতাসহ সকল গণতন্ত্রমণা মানুষকে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে এখনো ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ চালিয়ে যেতে হবে। আর তাহলেই দেশ থেকে ষড়যন্ত্রকারী ও দুস্কৃতিকারিদের মূলোৎপাটনসহ দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা, প্রকৃত গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।’
বিএনপি মহাসচিব দুস্কৃতিকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহবান জানান। তিনি নিহতের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনাসহ তার পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জ্ঞাপন এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।
প্রসঙ্গত দীর্ঘদিন পর শুক্রবার স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী নিজের এলাকা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যান। বিকাল ৫টার দিকে জেলা শহরের বেদগ্রাম মোড়ে পথসভা শেষ করে নেতাকর্মীরা জিলানীর বাড়ি টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হন। এতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শওকত আলী দিদার প্রাণ হারান।
এসময় অন্তত ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। জিলানীর গাড়িবহরে তার স্ত্রী-সন্তান এবং জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রাফিকুজ্জামান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সেলিমুজ্জামান সেলিমসহ স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও ছিলেন।
হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন এস এম জিলানী ও তার স্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্না। আহতদেরকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে জিলানীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এফআর
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com