ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর প্রায় দেড় দশক পর স্থবির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বিশেষ মনোযোগ দিয়ে আসছে পাকিস্তান। গত আগস্টের পর হুটহাট করেই সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশ ততটা আগ্রহী ছিল না। কিন্তু ব্যবসা, বাণিজ্য আর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংযুক্তিকে বিবেচনায় নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগে সাড়া দিচ্ছে বাংলাদেশ। এরই অংশ হিসেবে আগামী মাসেই পাঁচ দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এবং পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বলেন, আগামী ১৭ এপ্রিল ঢাকায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হবে। পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ বৈঠকে নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেবেন। এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ২২ এপ্রিল ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফরের সব কর্মসূচি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দু‘জনেরই সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ১৭ এপ্রিল ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হতে যাচ্ছে। প্রায় ১৫ বছরের বিরতিতে অনুষ্ঠেয় এই বৈঠকে দুই দেশের সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। তিনি জানান, আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সম্পর্কের নানা বিষয় আলোচনার সময় ঐতিহাসিক অনিষ্পন্ন বিষয়গুলোও আলোচনায় আসবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে নানা বিষয়ের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আকাশপথে সংযুক্তি, প্রতিরক্ষা, কৃষি খাতে সহযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পেতে পারে। সাংস্কৃতিক বিনিময়ের লক্ষ্যে একটি বিশেষায়িত কর্মসূচির প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে পাকিস্তানকে। দুই দেশের সবশেষ সচিব পর্যায়ের বৈঠকটি ২০১০ সালের নভেম্বরে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ফলে ওই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় প্রস্তাবিত কোনো সমঝোতা বা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এ বিষয়গুলো বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র সচিবের সভাপতিত্বে তার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে সরাসরি উড়োজাহাজ চলাচলের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। ভিসার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিরও ইঙ্গিত আছে। পাকিস্তানের একটি কম খরচের (লো কস্ট) বিমান সংস্থা ফ্লাই জিন্নাহ বাংলাদেশে যাত্রী পরিবহন শুরুর অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। বাংলাদেশ এরই মধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানকে উড়োজাহাজ চলাচলের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে। এখন পাকিস্তানের বিমান পরিচালনা সংস্থাটি জিএসএ চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com