ঢাকা      বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪, ৬ আষাঢ় ১৪৩১
শিরোনাম

কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার : অর্থমন্ত্রী

IMG
06 June 2024, 9:26 PM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান নির্বাচনী অঙ্গীকার হচ্ছে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। আর এই লক্ষ্যে কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের সরকার ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আজ বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বাজেট বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, দেশের কর্মক্ষম শ্রমশক্তিকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতির গতি সঞ্চারের লক্ষ্যে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ৪৬৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এরমধ্যে পরিচালন ব্যয় ২১৪ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় ২৪৮ কোটি লাখ টাকা। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৪৭ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে ৩৭৩ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সর্বস্তরে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে দারিদ্র্য নিরসন এবং আয়ের সুষম বণ্টন নিশ্চিতকরণে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষ্যে নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি শ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণ সাধন, সামাজিক নিরাপত্তা বিধান, শ্রম বিষয়ক কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করে কর্মপরিবেশের উন্নয়ন, শ্রম আদালতের মাধ্যমে শ্রম ক্ষেত্রে সুবিচার নিশ্চিতকরণ, শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরি নির্ধারণসহ শিশুশ্রম নিরসনে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ৩২টি শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে বিনামূল্যে ৯ লক্ষ ৪৭ হাজার ৪১৮ জনকে স্বাস্থ্য সেবা, ৫ লক্ষ ৩৫ হাজার ১৩৩ জনকে পরিবার পরিকল্পনা পরামর্শ ও সেবা এবং ১৬ লক্ষ ৫৫ হাজার ৭৬৭ জনকে চিত্তবিনোদন সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্পের নিম্নতম মজুরি ৮ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকায় পুনঃনির্ধারণসহ ৪৩টি শিল্প সেক্টরের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ/ পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন থেকে গত ১০ বছরে ২৩ হাজার ৩৮৭ জন শ্রমিককে ১১ কোটি ১২ লক্ষ টাকা এবং কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত ও পারিবারিক কারণে গত ৬ বছরে ২০ হাজার শ্রমিককে ১৯৬ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

নারীবান্ধব কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি ও মাতৃত্ব-সুরক্ষাকল্পে এবং শিশুর শৈশবকে সম্ভাবনাময় করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে ৬,৪৩০টি ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। নারী শ্রমিকদের কর্মস্থলের কাছাকাছি তাদের নিরাপদ আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ বন্দর ও চট্টগ্রামের কালুরঘাটে মোট ১ হাজার ৫৩০ জন শ্রমজীবী মহিলার আবাসনের জন্য বহুতল হোস্টেল এবং ৫ শয্যার হাসপাতালসহ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। কর্মহীন ও দুস্থ শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। এরই অংশ হিসেবে 'রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক ও চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের কর্মহীন ও দুস্থ শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন নীতিমালা-২০২০' প্রণয়ন করা হয়েছে। উক্ত নীতিমালার আলোকে এ পর্যন্ত কর্মহীন ১০ হাজার ২২২ জন শ্রমিককে সর্বমোট ৯ কোটি ১৯ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকা প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে আহত হওয়ার ঝুঁকি হতে সুরক্ষার জন্য 'এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি ইন্স্যুরেন্স' স্কীম পাইলট ভিত্তিতে চালু করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে সরকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সে লক্ষ্যে 'জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি, ২০১০' প্রণয়ন করা হয়েছে। আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শিশুশ্রম নিরসনের লক্ষ্যে 'বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন' শীর্ষক চলমান প্রকল্পের মাধ্যমে ইতোমধ্যে মোট ৯০ হাজার শিশুকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সরকার ৪৩টি সেক্টরকে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কর্মক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করে শিশুশ্রম নিরসনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারের গৃহীত কার্যক্রমের মাধ্যমে ইতোমধ্যে তৈরি পোশাক শিল্প, চিংড়ি শিল্প, ট্যানারী, কাঁচ, সিরামিক, জাহাজ রিসাইক্লিং, রপ্তানিমুখী চামড়াজাত শিল্প ও পাদুকা এবং রেশম শিল্প থেকে শিশুশ্রম নিরসন করা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রী বলেন, শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তৈরি পোশাক সেক্টরে ১ হাজার ৫৫০টি কারখানার কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। শ্রমিকের সার্বিক কল্যাণের উদ্দেশ্যে ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ১ম পর্যায়ে ৩ লক্ষ শ্রমিকের তথ্য অন্তর্ভুক্তিপূর্বক ডাটাবেইজ তৈরির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার জন শ্রমিককে বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা এবং ৪ লক্ষ ৫৫ হাজার জনকে চিত্তবিনোদন সেবা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসাথে, শ্রমিকের মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় ৪৯ হাজার ৫০০ জন শ্রমিককে প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।



বাংলাদেশ গ্লোবাল/এফআর

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন