ঢাকা      সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১
শিরোনাম

রাষ্ট্রপতির ভাষণে জরুরি অবস্থা, ক্ষুব্ধ ইন্ডিয়া জোট

IMG
28 June 2024, 5:01 AM

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ভারতে জরুরি অবস্থা জারির প্রসঙ্গ উঠে এলো সংসদের যৌথ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণে। বৃহস্পতিবার যৌথ অধিবেশনে ভাষণে জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ তুলে দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মু বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে সবচেয়ে বড় এবং অন্ধকারতম সময়। নতুন লোকসভা গঠনের পর প্রথা মাফিক রাষ্ট্রপতির ভাষণের মধ্য দিয়ে সংসদের সভা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এদিন রাষ্ট্রপতির ভাষণ প্রসঙ্গে বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, সরকারের কথা এবং মত উঠে এসেছে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে।

লোকসভা ভোটে ম্যাজিক ফিগার হাতছাড়া হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপির দেওয়া বিশ্বগুরুর তকমা হারিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন রাষ্ট্রপতির ভাষণেও প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বগুরুর বদলে বিশ্ববন্ধু বলতে শোনা যায়। তিনি বলেছেন, ভারতের সংবিধান তৈরি হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন রকমের চ্যালেঞ্জ এসেছে। যদিও সব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে পেরেছে ভারত।

তিনি বলেছেন, "১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল। সেটাই ছিল গণতন্ত্র এবং ভারতের সংবিধানের ওপর সবচেয়ে বড় আক্রমণ। সারা দেশের মানুষ সেই ক্ষুব্ধ ছিলেন। তবে এই ধরণের অসাংবিধানিক শক্তির বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে দেশ জয়ী হয়েছিল। কারণ, গণতন্ত্র ভারতের মূল নীতি। "

ভারতের রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেছেন, "সংবিধানকে মর্যাদা দিতে আমার সরকার ২৬ জুন দিনটিকে সংবিধান দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।" নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের কথাও উঠে আসে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে। ১ জুলাই কার্যকর হতে চলেছে তিন ন্যায় সংহিতা আইন। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, "১ জুলাই থেকে কার্যকর হতে চলেছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইন। ইংরেজ আমলের আইন দীর্ঘ বিগত দশক ধরে চলে এসেছে। অনেক দিন ধরে এই আইন পরিবর্তনের কথা বলা হলেও বাস্তবে তা পরিবর্তন করেছে আমার সরকার।" ক্যা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, "ক্যা আইন অনুযায়ী আমার সরকার শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া শুরু করেছে।"

ভারতের রাষ্ট্রপতির ভাষণে আফস্ফা আইনের প্রসঙ্গ উঠে এলেও মণিপুরের অশান্তি নিয়ে একটি কথাও শোনা যায়নি। বরং উত্তর-পূর্বের উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এদিন যৌথ সভার ভাষণে নেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, "সম্প্রতি অনিয়ম এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার মোকাবিলা করা হয়েছে খুবই কঠোরভাবে এবং পরীক্ষা ব্যবস্থা আরও উন্নত করার লক্ষ্যে। অনেক রাজ্যেই এই ধরণের ঘটনা ঘটেছে। রাজনীতির ঊর্ধ্বে ওঠে এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।" নেট প্রসঙ্গ তুলতেই সভায় তুমুল বিক্ষোভ করতে থাকে ইন্ডিয়া শিবির।

রাষ্ট্রপতির ভাষণকে সরকারের জয়গান বলে দাবি করেছে বিরোধী শিবির। পাশাপাশি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ বয়কট করেন আপ সাংসদরা। রাষ্ট্রপতির প্রতি পূর্ণ সম্মান রয়েছে জানিয়ে আপের বক্তব্য, এই বক্তব্য সরকারের তৈরি করা।

আপের রাজ্যসভার দলনেতা সঞ্জয় সিং বলেন, "একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ। গণতন্ত্র এবং সংবিধান রক্ষার জন্য এই প্রতিবাদ। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে, কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহার বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি।"

কংগ্রসের প্রবীণ সাংসদ দিগ্বিজয় সিং বলেন, "আমরা রাষ্ট্রপতির ভাষণে ভালো কিছু শোনার অপেক্ষায় ছিলাম। যদিও এমন কিছু বিষয়ে তিনি বক্তব্য রাখলেন, যার কোনও প্রয়োজন ছিল না।" তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেন, "সরকারের সমস্যা হলো, তারা বুঝতে পারছে না ৩০৩ থেকে তারা ২৪০ এ নেমে এসেছে। ৩০৩ আসনের ভিত্তিতে তারা বক্তব্য তৈরি করেছে। সেই কারণেই রাষ্ট্রপতি বলেছেন সরকারের পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। যদিও আসলে সরকার সংখ্যালঘু।"

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন