ঢাকা      শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১
শিরোনাম

নোয়াখালীতে খাদ্য সংকটে হরিজন সম্প্রদায়

IMG
28 August 2024, 2:47 PM

মাওলা সুজন, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ঘরের বিছানার খাট ছুঁই ছুঁই পানি। অতিরিক্ত পানি থাকায় জ্বলানো যাচ্ছে না রান্নার চুলা। বন্যার পানির সাথে কোনো রকমে বসবাস তাদের। বাইরে ও ঘরে পানি থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা। রয়েছে অর্থ সংকটও। ফলে খাদ্য সংকটেও ভুগছে প্রায় শতাধিক পরিবার। বলছি নোয়াখালী জেলা শহরের হরিজন সম্প্রদায়ের কথা।

সূত্রে জানা যায়, নোয়খালী জেলা শহরের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী অফিসে, শহরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত রয়েছে হরিজন সম্প্রদায়। তারা সকাল থেকে রাত অব্দি কাজ করেন বিভিন্ন জায়গায়। যা পান তা দিয়ে কোনো রকমে জীবন ও সংসার চালান তারা। তাদের জীবনে নেই কোনো উৎসব অথবা আনন্দ। শহরের ব্যস্ততম সড়কের পাশে প্রায় ৫০শতাংশ জমির উপর একটি কলোনীতে তারা বসবাস করে।

নোয়াখালীর স্মরণকালের বন্যায় তাদের দিন যাচ্ছে অর্ধাহরে। একবেলা খাদ্য সহায়তা পেলেও অন্যবেলা না খেয়ে থাকতে হয় জানিয়েছেন তারা। সুপেয় পানির অভাবে তারা নানা রকম ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া, চর্ম রোগও দেখা দিয়েছে বসবাসকারীদের।

সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, কলোনীর ভিতরে যেতে হলে পানি মাড়িয়েই তাদের ঢুকতে হয়। যত ভিতরে যাবে শুধু পানি আর পানি। কোথাও হাটুঁ সমান, আবার কোথাও এর চাইতে বেশী। ফলে, পরিবার পরিজন নিয়ে খুবই অস্বস্তিকর ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দিন কাটাচ্ছে তারা। কষ্টে আছে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থরা। খাদ্য সংকটে আছে প্রায় প্রতিটি পরিবার। এক বেলা তাদের ইসকন মন্দির থেকে খাবার সরবারাহ করা হয়। অন্য বেলা তাদের থাকতে হয় না খেয়ে। ফলে এক রকম মানবেতর জীবন পার করছে নোয়াখালীর হরিজন সম্প্রদায়।

প্রতিমা হরিজন বলেন, আমরা খুবই কষ্টে আছি। এক বেলা খাবার পাচ্ছি। অন্য বেলা না খেয়ে থাকার মতো। শিশুদের নিয়ে বিপদে আছি।
শোভা হরিজন বলেন, আমরা প্রতি বর্ষায় জলাবদ্ধতার স্বীকার হই। কিন্তু এ বছর বন্যায় আমরা একেবারেই সীমাহীন দিন পার করছি। এক বেলা খাবার পাচ্ছি। ঘরে পানি থাকায় চুলা জ¦লেনা। ফলে আরেক বেলা উপাসের মতো থাকতে হয়।

সোহাগ হরিজন বলেন, কোনো রকমে দিন পার করছি। ঘরের সামনে হাঁটু সমান পানি। ভিতরে আরো বেশী। যারা ভিতরে থাকে তাদের অবস্থা খুবই নাজুক।

আকাশ হরিজন বলেন, ঘরে অতিরিক্ত পানি থাকায় আমরা খুবই কষ্টে আছি। না পারছি ঘরে থাকতে, না পারছি বের হয়ে যেতে। অন্য কোথাও থাকার জায়গাও নাই। আমাদের কেউ আশ্রয়ও দিবে না। অসুস্থ যারা তারা বেশী সমস্যায় আছে।

হরিজন সম্প্রদায় কলোনীর সর্দার গণেশ হরিজন বলেন, আমরা সমাজের নিন্ম শ্রেণীর কাজ করি। আমাদের সেভাবেই দেখা হয়। সমাজে আমরা অবহেলিত। কিন্তু আমরাও মানুষ। আমাদেরও পেট আছে, জীবন আছে। এই বন্যায় আমরা খুবই মানবেতর জীবন দিন পারছি। কেউ আমাদের খবর নিচ্ছে না। এক বেলা খাবার পাচ্ছে এই কলোনীর বাসিন্দারা। অন্য বেলা না খেয়ে থাকতে হয়। কোনো সহযোগীতা পাচ্ছি না। অন্যান্য জায়গায় যেভাবে সহায়তা করা হয়, এখানে সেভাবে কেউই আসছেনা।

এবিষয়ে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি আপনার কাছ থেকে তাদের মানবেতর জীবনের কথা শুনলাম। আমাকে কেউ তাদের বিষয়ে জানায়নি। আমি তাদের সহযোগীতার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।



বাংলাদেশ গ্লোবাল/এফআর

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন