মাওলা সুজন, বাংলাদেশ গ্লোবাল: গত কয়েকদিন ধরেই পানিবন্দি হয়ে আছেন নোয়াখালীর বাসিন্দারা। বন্যায় তলিয়ে থাকা পথ-ঘাট, ঘরবাড়িতে পানি থাকায় এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আসছেন মানুষ। এর মধ্যে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতভর বজ্রসহ ভারী বর্ষণে পানি আরও ছয় ইঞ্চি বেড়ে গেছে। ফলে সেখানে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হচ্ছে। এতে আতঙ্ক বাড়ছে পানিবন্দি বানভাসিদের।
জানা যায়, নোয়াখালীর ৮ উপজেলার ৮৭ ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ২১ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। ১১৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে অছেন প্রায় সোয়া দুই লাখ মানুষ। বিভিন্ন জায়গায় সড়কের আশপাশের আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষ সহযোগিতা পেলেও প্রান্তিক অঞ্চলগুলোতে পৌঁছাচ্ছেনা ত্রাণ সহায়তা। ফলে অধিকাংশ জায়গায় দেখা দিয়েছে খাদ্যের জন্য হাহাকার।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানা যায়, নোয়াখালীর ৮৭ ইউনিয়নে সরকারিভাবে নগদ ৪৫ লাখ টাকা, ৮৮২ টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও ৫ লাখ টাকার পশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা শহর ও তার আশপাশের আশ্রয়কেন্দ্রেগুলোতে একাধিকবার সরকারি-বেসরকারি সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকলেও প্রান্তিক অঞ্চলগুলোতে যাতায়াতের সমস্যার কারণে সহায়তা ঠিকভাবে পৌঁছাচ্ছেনা। এতে সাহায্যের জন্য বিভিন্ন স্থানে হাহাকার করতে দেখা গেছে বানভাসীদের।
এবিষয়ে মোজাম্মেল হোসেন নামে একজন বাংলাদেশ গ্লোবাল'কে বলেন, মধ্যরাত থেকে বর্জ্যসহ অবিরাম বৃষ্টি হয়। এতে পানি আরো বেড়ে গেছে। ফলে নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
সুবর্নচরের চরজুবলী গ্রামের সিরাজ মিয়া বাংলাদেশ গ্লোবাল'কে বলেন, অতিরিক্ত পানির কারণে রোপা আমন ধানের বীজ নষ্ট হয়ে যাবে। সামনের আমন মৌসুম নিয়ে চিন্তায় আছি। রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে আছে। এখনো মানুষ সেন্টারে যাচ্ছে।
সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের আকবর হোসেন বাংলাদেশ গ্লোবাল'কে বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাবার সংকট রয়েছে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় বেশী পানি থাকায় নৌকা ছাড়া যাওয়া যায় না। সেখানে সহায়তা পৌঁছাচ্ছেনো। ডার ফলে মানুষজন না খেয়েও আছে। বিশেষ করে কষ্টে আছে শিশু,বয়স্ক ও অসুস্থরা।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজনের) জেলা সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের বাংলাদেশ গ্লোবাল'কে বলেন, সমন্বয়হীনতার কারণে ত্রাণ দুর্গম অঞ্চলে পৌঁছাচ্ছেনা। বিভিন্ন জেলা থেকে যে সব ত্রাণ আসছে সেগুলো সঠিকভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাচ্ছেনা।
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দিনে বৃষ্টি হয়নি। মধ্য রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন করে আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেজন্য বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ গ্লোবাল'কে বলেন, নোয়াখালীতে স্মরণকালের বন্যায় আমরা প্রশাসন কাজ করছি। জেলার ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গম এলাকায় শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে সহায়তা আসছে। বিভিন্ন এলাকার মানুষ সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে। বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবীরা নিরলসভাবে কাজ করছে। বৃষ্টি না হলে আমাদের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এফআর
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com