ঢাকা      রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১
শিরোনাম

পর্ষদ পুনর্গঠন করা সাত ব্যাংকের ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের তথ্য চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক

IMG
03 September 2024, 10:16 AM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবালঃ অনিয়ম ও দুর্নীতি ঠেকাতে যেসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে, ওই ব্যাংকগুলোর কী পরিমাণ টাকা প্রভাবশালীদের কাছে আটকে রয়েছে, তা জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি এসব ব্যাংকে যে তারল্য–সংকট চলছে, তা থেকে উত্তরণে কী পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে।

এসব তথ্য নিয়ে আজ মঙ্গলবার পুনর্গঠন করা ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। প্রথম দফায় আজ ন্যাশনাল ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

এখন পর্যন্ত বেসরকারি খাতের সাত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)। এর মধ্যে প্রথম ছয়টি এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন। তবে পর্ষদ পুনর্গঠন করে গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা হয়েছে এসব ব্যাংক।

ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে আমরা ব্যাংকের সমস্যাগুলো তুলে ধরব। ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখতে তাদের সাহায্য-সহযোগিতা চাইব। সহায়তা পেলে আশা করি, স্বল্পসময়ে আমরা পূর্ণাঙ্গরূপে কার্যক্রম শুরু করতে পারব।’

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর নিরুদ্দেশ হয়ে যান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে যোগ দিয়ে আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের বলেন, যাঁরা ব্যাংকের টাকা নিয়ে ফেরত দেননি, তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে না। দুর্বল ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হবে।

২০ আগস্ট ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ বিলুপ্তের মাধ্যমে সেই প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। এখন পুনর্গঠিত পর্ষদের মাধ্যমে কীভাবে ব্যাংকগুলোর উন্নতি করা যায়, তা নিয়ে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সভা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি।

আজকের সভা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্তায় বলা হয়েছে, যেসব ঋণ আটকে আছে, তা আদায়ের পরিকল্পনা করতে হবে। এর মধ্যে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে কার কাছে কত টাকা আটকে আছে, এর সুনির্দিষ্ট তালিকা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দিতে হবে। যেসব ঋণ আদায়যোগ্য, তার বিপরীতে কী পরিমাণ জামানত বা বন্ধকী আছে, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। আটকে পড়া অর্থ আদায়ে ব্যাংকের পরিকল্পনা কী, তা জানাতে বলা হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।

ন্যাশনাল ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সংসদ সদস্য আসলামুল হকের মাইশা গ্রুপের খেলাপি ঋণ স্থিতি ৩ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা, যার ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ আছে। বসুন্ধরা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণের স্থিতি ৩ হাজার ৬১২ কোটি টাকা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণ ৩ হাজার ১৭১ কোটি টাকা, এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের নাসা গ্রুপের ১ হাজার ৯০২ কোটি টাকা। এ ছাড়া চট্টগ্রামের মো. ইয়াসীন চৌধুরীর এফএমসি গ্রুপের ঋণ ১ হাজার ৬১০ কোটি টাকা, সাইফ পোর্ট হোল্ডিং ও সাইফ পাওয়ারটেকের ঋণ ১ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা, ফু–ওয়াং ফুড ও এসএস স্টিলের ঋণ ৬৯৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন কর্ণফুলী গ্রুপের ঋণ ৬৭৫ কোটি টাকা।

অন্যদিকে ব্যাংকটির খেলাপি গ্রাহকদের অনেকেই প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন।

বাংলাদেশ গ্লোবাল/জেএস

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন