ঢাকা      বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১
শিরোনাম

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোন টাকা আত্মসাৎ হয়নি : দুদক আইনজীবী

IMG
10 November 2024, 2:51 PM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট’র কোনো টাকা আত্মসাৎ করেননি বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আসিফ হাসান। ওই টাকা ট্রাস্টের ফান্ডেই রয়েছে বলে জানান তিনি।

রোববার সকালে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে করা লিভ টু আপিল শুনানি হয়।

শুনানিতে দুদকের আইনজীবী জানান, মামলার নথিপত্র অনুযায়ী দেখা যায় ট্রাস্টের দুই কোটি ৩৩ লাখ টাকা ট্রান্সফার হয়েছে; কেউ তা আত্মসাৎ করেনি।

এ সময় আদালতে এ মামলায় খালেদা জিয়ার দেওয়া ১৫০ পৃষ্ঠার জবানবন্দিকে ঐতিহাসিক দলিল উল্লেখ করে কিছু অংশ আপিল বেঞ্চের সামনে পড়ে শোনানো হয়। আদালতে খালেদা জিয়ার জবানবন্দিকে কবি নজরুলের রাজবন্দির জবানবন্দির সঙ্গেও তুলনা করেন আইনজীবী।

এদিকে এ মামলায় আগামীকাল লিভ টু আপিলের আদেশের দিন নির্ধারণ করেছে আপিল বিভাগ।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল জানান, কোনো অনিয়ম না হলেও কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ২০১৮ সালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে প্রথমে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়। পরে খালেদা জিয়া আপিল আবেদন করলে হাইকোর্ট সাজা আরও পাঁচ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর কারাদণ্ডের রায় দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আর রাষ্ট্র পক্ষে শুনানি করেন এটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান।

সিনিয়র এডভোকেট জয়নুল আবেদীন হাইকোর্ট রায়ের বিরুদ্ধে লিভ মঞ্জুরের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।

হাইকোর্ট রায়টি আদালতে পড়ে শোনান ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

আদালতের অনুমতি নিয়ে এ মামলায় বিচারিক আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় বেগম খালেদা জিয়ার দেয়া জবানবন্দী উপস্থাপন করেন এটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এটর্নি জেনারেল বলেন, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের জবানবন্দী ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বেগম খালেদা জিয়ার এ জবানবন্দী তার চেয়েও বেশি গুরুত্ব বহন করে।

জবানবন্দিতে বেগম খালেদা জিয়ার তার বিরুদ্ধে বিচারের প্রেক্ষাপট, হয়রানির বিষয় তুলে ধরেন। বিচার বিভাগের উপর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়ন্ত্রণের নানা দিক তুলে ধরা হয় এ জবানবন্দীতে।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদ- দেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। একই বছরের ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দেন হাইকোর্ট। এরপর সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।

অন্যদিকে, ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। গত ৪ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়। তার অংশ হিসেবে নিজের খরচে পেপারবুক (মামলা বৃত্তান্ত) তৈরির আবেদন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ গ্লোবাল/জেএস

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন