ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: জীবনের বিনিময়ে হলেও অভ্যুত্থানের স্পিরিট রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, আমরা আপনাদের কথা দিতে চাই- জীবনের বিনিময়ে হলেও এই অভ্যুত্থানের স্পিরিট রক্ষা করবো। এছাড়া আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবো।
আন্দোলন শুরু নিয়ে তিনি বলেন, অভ্যুত্থানে আমাদের যে লড়াই; এটা ৫ জুন সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছিল। যখন ২০১৮ সালের কোটা নিয়ে জারি করা পরিপত্রটা বাতিল করা হয়। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি এবং সায়েন্স লাইব্রেরিতে একটি বিক্ষোভ হয়। এরপর থেকে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে দাঁড়িয়ে আছি। গত ৫ জুন থেকে ৫ আগস্ট- এই সময়টুকুতে রাষ্ট্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করেননি। তারা একটা ফ্যাসিস্ট রেজিম আওয়ামী লীগের হুকুমমতো নিজের দায়িত্ব পালন করেছে। বিগত ১৬ বছরে এই রকম একটা স্বৈরাচার সিস্টেমকে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হতে দিয়েছে। এটাই এই বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে দায়।
শেখ হাসিনা পুলিশকে অপব্যবহার করার দাবি করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ভাই-বোনদের ওপর প্রথম ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নৃশংস একটি হামলা চালায়। পাশাপাশি রংপুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় যখন হত্যাযক্ষ শুরু হয়। সেই সময় খুনি শেখ হাসিনা যে ক্ষমতা জনগণের মাধ্যমে অর্জিত ছিল না। সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাংলাদেশ পুলিশকে ব্যবহার করেছে। তিনি বিগত ১৬ বছরে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে পুলিশকে ব্যবহার করেছে।
পুলিশের ইমেজ সংকট আহ্বান করে তিনি বলেন, জুলাই আগস্ট বিপ্লবে নিজেদের কর্মকাণ্ডের কারণে পুলিশ ইমেজ সংকটে রয়েছে। নিজেদের সুনামের সঙ্গে কাজ করে, সেই ইমেজ ফিরিয়ে আনতে হবে। আন্দোলনে যারা রাজপথে শহীদ হয়েছেন, তাদের হত্যার বিচার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ চাইলে সবকিছু করা সম্ভব। তাদের প্রভাব মাঠপর্যায়ে সবচাইতে বেশি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কিছুদিন সহযোগিতা করবে, আবার চলে যাবে। পুরো বাংলাদেশে মাঠপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য পুলিশ যে ভূমিকা পালন করতে পারে, আর কেউ সেটা পারে না। আমরা এখনো আপনাদের প্রতি আস্থা হারায়নি। আমরা আস্থাটা রাখতে চাই, আপনারা আপনাদের কাজের মাধ্যমে সেটা প্রমাণ করতে হবে।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, প্রত্যেক জেলায় যে সব শহিদ পরিবার, আহত যোদ্ধারা রয়েছে- জেলা প্রশাসন এবং পুলিশসহ অন্যান্য স্টেক হোল্ডাররা মিলে যদি তাদের দায়িত্ব আমরা ভাগ করে নিই। তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী শহিদ পরিবার থেকে একজন করে হলেও চাকরির ব্যবস্থা করি। আমাদের দায়িত্বগুলো সহজ হয়ে যায়। আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, আপনাদের কাজের মধ্য দিয়ে তাদের পাশে থাকবেন।
অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বক্তৃতা করেন।
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com