ঢাকা      শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
শিরোনাম

লস অ্যাঞ্জেলেস 'মুক্ত' করার ঘোষণা ট্রাম্পের

IMG
11 June 2025, 11:40 PM

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: লস অ্যাঞ্জেলেসের পুলিশ জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন তল্লাশির প্রতিবাদে পাঁচদিন ধরে গড়ে ওঠা বিক্ষোভ ঠেকাতে তারা 'গণগ্রেফতার' করেছে। মেয়র কারেন ব্যাস শহরের কেন্দ্রে তুলনামূলক ছোট একটি এলাকায় রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস ও লুটপাট করা হচ্ছে।

এদিকে, অভিবাসন তল্লাশিকে কেন্দ্র করে শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখনো অব্যাহত আছে এবং আমেরিকাজুড়ে অনেক জায়গায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতোমধ্যে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। এ নিয়ে রাজ্যের কর্মকর্তাদের সাথে তুমুল মতবিরোধ তৈরি হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তিনি শহরটি 'মুক্ত' করার ঘোষণা দিয়েছেন। এটিকে গণতন্ত্রের ওপর একটি 'আঘাত' বলে মন্তব্য করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম।

ডোনাল্ড ট্রাম্প চার হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য ও সাতশো মেরিন সেনা মোতায়েন করেছেন। তিনি বলেছেন, 'বিদেশি শত্রুদের দ্বারা দখল' ঠেকাতে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এসব সেনাদের মানুষ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম পাল্টা মার্কিন প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যে বলেছেন: "তিনি আবারো উত্তেজনার পথ বেছে নিয়েছেন, তিনি আরও শক্তিকেই বেছে নিলেন"। ক্যালিফোর্নিয়ার এই গভর্নরকে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য একজন প্রার্থী হিসেবে দেখা হয়। তিনি সতর্ক করে বলেছেন 'এরপর হবে অন্য রাজ্যে'।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত আটটায় কারফিউ কার্যকর হওয়ার পর পুলিশ শহরের কেন্দ্রে বিভিন্ন এলাকার দিকে এগিয়ে যায় ও বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ছোঁড়ে।

তবে পুলিশ মোট কতোজনকে আটক করেছে তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। মেয়র জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুইশ'র মতো আটক হয়েছে। কারফিউ জারির ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, 'ধ্বংসযজ্ঞ ও লুটপাট বন্ধ করতে' এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ২৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট হয়েছে সোমবার রাতে। তবে শহরের অন্য জায়গায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিলো।

লস অ্যাঞ্জেলেসের পুলিশ প্রধান জিম ম্যাকডনেল বলেছেন, জীবন ও সম্পদ রক্ষায় কারফিউ একটি দরকারি পদক্ষেপ ছিলো। আর মেয়র বলেছেন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট লাতিনো এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিশৃঙ্খলার উস্কানি দিয়েছে।

"তল্লাশি যদি ৩০ দিনই চলে এবং সেই গুজবটাই আছে। আমরা যদি আমাদের শহরকে আবার শান্তিপূর্ণ দেখতে চাই, আমি আবারো প্রশাসনকে এই তল্লাশি বন্ধ করার আহবান জানাচ্ছি," বলেছেন তিনি।

এদিকে, পেন্টাগন জানিয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসে সেনা মোতায়েনে খরচ হবে প্রায় ১৩৪ মিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে, মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। জর্জিয়ার আটলান্টায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ছুঁড়েছে দাঙ্গা পুলিশ। শত শত মানুষ সেখানে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

নিউইয়র্কের পুলিশ জানিয়েছে, ম্যানহাটনে কয়েক হাজার মানুষ মিছিল করেছেন। সেখানে যান চলাচল বন্ধের চেষ্টা করায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট সান আন্তনিওতে ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করেছেন। সেখানে সমাবেশের ঘোষণা এসেছে। ফিলাডেলফিয়ায় মঙ্গলবার বিক্ষোভের জন্য জমায়েত হতে শুরু করলে সেখানে থেকে ১৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

ওয়াশিংটন ডিসিতে সোমবার কয়েকটি শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা পদযাত্রা করে ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস ভবনের সামনে যান। তারা লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ইউনিয়ন নেতা ডেভিড হুয়ের্তার আটকের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সোমবার তিনি মুক্তি পেয়েছেন।

বোস্টনে সোমবার সিটি হলের সামনে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ' মানুষ। পরদিন বিক্ষোভকারীদের একটি মিছিল হয়েছে ম্যাসাচুসেটস স্টেট হাউজ পর্যন্ত।

সিয়াটলের ইমিগ্রেশন কোর্টের সামনে বিক্ষোভকারীদের একটি দল জমায়েত হয়েছিলো। তারা সেখানেও সড়ক বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

এ বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন