ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ভারত ও চীন সম্ভবত আগামী মাস থেকেই সরাসরি বিমান পরিষেবা পুনরায় চালু করতে যাচ্ছে। ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে মঙ্গলবার এ কথা জানানো হয়েছে। এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নতির লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, ভারত সরকার এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো-সহ বিভিন্ন এয়ারলাইনসকে চীনে দ্রুত ফ্লাইট চালুর জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে। করোনাভাইরাস মহামারির পর থেকেই ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
২০২০ সালের জুন মাসে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনা সেনাদের প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। এটি ছিল কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সামরিক সংঘর্ষ, যার ফলে সম্পর্ক গুরুতরভাবে অবনতি ঘটে। সংঘর্ষের পর উভয় দেশ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) বরাবর সেনা মোতায়েন বাড়িয়ে দেয় এবং একাধিক সামরিক ও কূটনৈতিক বৈঠকে জড়িয়ে পড়ে। যদিও কিছু এলাকায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, অনেক অংশ এখনও সমাধানহীন রয়ে গেছে।
তবে গত বছর একটি বড় অগ্রগতি ঘটে, যখন লাদাখের ডেপসাং ও ডেমচক প্লেইন এলাকা থেকে উভয় পক্ষ সেনা প্রত্যাহার করে। এই প্রত্যাহারের প্রক্রিয়ায় সেনা, তাঁবু ও অস্থায়ী কাঠামো সরানো হয়, যা শেষ হয় ৩০ অক্টোবর।
ওই সংঘর্ষের প্রভাব পড়ে দেশ দু'টির বাণিজ্য ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগেও। ভারতে চীনা বিনিয়োগে নিষেধাজ্ঞা, আমদানিতে কড়া নজরদারি এবং মহামারির সময়ে সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ রাখা হয়। সব মিলিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও বেড়ে যায়। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলিতে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাসে কিছু ছোট ছোট ইতিবাচক ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে, এবং নিয়মিত আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টাও চলছে।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চলতি মাসেই সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন সম্মেলনে অংশ নিতে চীনের তিয়ানজিন সফরে যাচ্ছেন। এটি ২০১৯ সালের পর চীনে তাঁর প্রথম সফর। চীন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বলেছে, তারা আশা করে এই সম্মেলন হবে “ঐক্য, বন্ধুত্ব ও ফলপ্রসূতার একটি মঞ্চ”।
নরেন্দ্র মোদির এই সফরের আগে চীনে একাধিক উচ্চ পর্যায়ের ভারতীয় প্রতিনিধি দল সফর করেছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। এই প্রেক্ষাপটে সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় শুরু হলে, তা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হতে পারে।
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com