ঢাকা      মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২
শিরোনাম

নির্বাচন ও ক্ষমতার পালাবদলের জন্য জুলাইয়ের অভ্যুত্থান হয় নাই: রেজাউল করীম

IMG
15 September 2025, 9:11 PM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, জুলাইয়ে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছে দেশকে স্থায়ীভাবে স্বৈরতন্ত্রের কবল থেকে রক্ষা করা, রাষ্ট্রের পরতে-পরতে জমা হওয়া ৫৪ বছরের জঞ্জাল দূর করা, ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, সর্বত্র জবাবদহিতা নিশ্চিত করা, সকল নাগরিকের ভোটের অধিকার, সম্মান-মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য। দেশের একটি রাজনৈতিক পক্ষের বক্তব্য-বিবৃতি ও আচরণ দেখলে মনে হয়, জুলাইয়ের আন্দোলন হয়েছিলো কেবলই ক্ষমতার পালাবদলের জন্য। আদতে বিগত দিনের রাজনীতিতে এটা পরিষ্কার যে, কেবলই নির্বাচন ও ক্ষমতার পালাবদলের জন্য জুলাইয়ের অভ্যুত্থান হয় নাই। দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, সংস্কার ও বিচারকে গুরুত্ব না দিয়ে নির্বাচনকে মুখ্য করে তোলা হয়েছে যা দেশকে পুরোনো অশুভ বন্দোবস্তে আবারো নিপতিত করবে বলে আমরা আশঙ্কা করি। আজ সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় চরমোনাই পীর বলেন, আমরা যারা জুলাইয়ে জীবন বাজি রেখে সংগ্রাম করেছি, যারা বাচ্চাদের রক্ত ও জীবন উৎসর্গিত হতে দেখেছি, যারা আহতদের গোঙানি শুনছি; তারা এই পরিস্থিতি মেনে নিতে পারি না। সেই তাগিদ থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে এবং আমরা জুলাইয়ের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট কিছু দাবি নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

নির্বাচনের পরে সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়ে ভিন্নমত জানিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, আমরা ৯০ সালেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যৌথ সংস্কার প্রতিজ্ঞা দেখেছি। নির্বাচনের আগেও বিভিন্ন দল ইশতেহার দেয়। সেগুলোতে সুন্দর সুন্দর বাণী থাকে। কিন্তু তার কোনো আইনি ভিত্তি না থাকায় নির্বাচনের পরে গালভরা সেসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন আর হয় না। জুলাই সনদ ও সংস্কার প্রতিশ্রুতিই হয়ে থাকবে, যদি না তার আইনি ভিত্তি নিশ্চিত না করা যায়। আমরা মনে করি, যেকোনো গণঅভ্যুত্থানের সার্বভৌম এখতিয়ার থাকে। সেই ক্ষমতা ও এখতিয়ার বলে জুলাই সনদকে এই আমলেই বাস্তবায়ন করতে হবে এবং তারই ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। কারণ, অতীতের অভিজ্ঞতায় নির্বাচনের পরে কেউ এসে এটা বাস্তবায়ন করবে সেই আশা করা যায় না। অতএব, দ্রুত সাংবিধানিক আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদকে আইনসম্মত করতে হবে।

ফ্যাসিবাদের বিচার গতি ও বিস্তৃতি নিয়ে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, আওয়ামী লীগ যে মাত্রায় ও পরিমাণে অপরাধ করেছে তা কোন পথভ্রষ্ট রাজনৈতিক দলের অপকর্ম না। বরং মাফিয়াদের মতো সুসংহত ও সংঘবদ্ধ অপরাধ। ফলে তাদের বিচারটাও সেই বিবেচনায় ও সেই মাত্রায় হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের মূলহোতারা সবাই দেশের বাইরে বসে নানা রকম চক্রান্ত করেই যাচ্ছে। জেলা ও থানা পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতারা এলাকায় ফিরতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের প্রতিহিংসা ও জিঘাংসা কত নির্মম তা কল্পনাও করা যায় না। বর্তমানে বিচারের যে পরিস্থিতি তাতে অভ্যুত্থানের বিপ্লবীদের জীবন ও দেশ হুমকির মুখোমুখি। এমন বাস্তবতায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দাবি করছে যে, ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম জেলা পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে এবং বাইরে পালিয়ে থাকা অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে। পাচারকৃত টাকা উদ্ধারে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

পিআরের পক্ষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে দলের আমির বলেন, আমরা বারংবার বলছি যে, বিগত ৫৪ বছরে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে সেই পদ্ধতি দেশকে ক্রমান্বয়ে পেছনের দিকে নিয়ে গেছে। দেশের বর্তমান যা কিছু উন্নয়ন তা ব্যক্তি খাতের প্রচেষ্টা ও উদ্যোগের ফল। কিন্তু রাজনৈতিক সংস্কৃতি, রাষ্ট্রের ভিত্তি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বকীয়তা ও স্বাধীনতা নষ্ট করা এবং দুর্নীতি-দুঃশাসনের মাত্রায় প্রতিটি নির্বাচনই দেশকে আগের চেয়ে খারাপ অবস্থায় ফেলেছে। এমন তিক্ত অতীতের বাস্তবতায় পুরোনো বন্দোবস্তে নির্বাচন করার কোনো অর্থ হয় না। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তাই উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনের জন্য দাবি জানিয়ে আসছে। পিআরের সুবিধা কি তা আমরা বারংবার আলোচনা করেছি। আমরা পিআর পদ্ধতিতে আগামী নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

এ বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন