ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ইনসাফ নিয়ে কোনো আপস করা হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘গুম কমিশন করা হয়েছে। ...আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি, এখনো করে যাচ্ছি। একদম স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছি- সেনাবাহিনী বিচারের পক্ষে। যেটা বিচার হবে, সেটার পক্ষে আমরা থাকবো। ইনসাফ নিয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ হবে না।’ গতকাল শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকালে ঢাকা সেনানিবাসের মেসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক সদস্যদের মামলা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘গত ৮ অক্টোবর আইসিটিত প্রথম দু'টি চার্জশিট জমা পড়ে। এরপর তৃতীয় আরেকটা চার্জশিট জমা পরে। এই সংবাদটি আসা শুরু করেছে ওই দিন সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে। আমরা টিভি স্ক্রলের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, চার্জশিট জমা পড়েছে এবং ট্রাইব্যুনাল এক্সেপটেড হয়েছে। চার্জশিটগুলোর মধ্যে একটা ছিল গুম সংক্রান্ত। যারা তখন ডিজিএফআইয়ে কর্মরত ছিলেন, তাদের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ। আরেকটা ছিল র্যাবের টিএফআই নিয়ে, আরেকটা গত বছরের ৪-৫ আগস্টের রামপুরার ঘটনা নিয়ে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়ে গেল। পরোয়ানার পর আইজিপির কাছে চলে যায়। নিয়ম অনুযায়ী এবং ২২ তারিখ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো চার্জশিট কিংবা গ্রেফতারি পরোয়ানা পাইনি। চার্জশিটে প্রায় ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার নাম এসেছে। এর মধ্যে অবসরে আছেন ৯ কর্মকর্তা, এলপিআরে আছেন একজন কর্মকর্তা ও কর্মরত আছেন ১৫ জন। যারা অবসরে চলে গেছেন, তাদের প্রতি আমাদের সেনা আইন ওইভাবে খাটে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সংবিধান স্বীকৃত বাংলাদেশের সকল আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ অক্টোবর কর্মরত ১৫ ও এলপিআরে থাকা ১ সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে আসার জন্য একটা আদেশ সংযুক্তি করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আদেশে তাদের বলা হয়, ৯ অক্টোবর তারা যেন ঢাকা সেনানিবাসে সেনা হেফাজতে চলে আসেন। আমরা কিন্তু এখনো গ্রেফতারি পরোয়ানা পাইনি বা পুলিশও আমাদের কিছু জানায়নি। তারপরও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কারণে এসব কর্মকর্তাদের হেফাজতে আসার জন্য আদেশ দিয়ে দেয়।’
মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এরকম প্র্যাকটিস করে। এটার মতো না হলেও এরকম কিংবা অনেক সেনসিটিভ কেসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ৫৪ বছর পার করে এসেছে। যাদের নামে অভিযোগ উঠে, প্রথমে তাদের আমরা হেফাজতে নিয়ে নেই। তখন বিভিন্ন কোর্ট মার্শাল হয়। কোর্ট মার্শালের রায় অনুযায়ী তখন বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ আমলে সংঘটিত গুমের ঘটনায় করা দু'টি মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত বুধবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এর মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা।
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com