ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকেও ভাতা সংক্রান্ত ইস্যুতে সমাধান আসেনি। বৈঠককে আই ওয়াশ দাবি করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজি।
শিক্ষক নেতা দেলোয়ার হোসেন আজিজি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ৫ শতাংশ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। অন্যান্য ভাতার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। কিন্তু আমরা শিক্ষা উপদেষ্টাকে বৈঠকে এখন ১০ শতাংশ এবং পরবর্তী বাজেটে ১০ শতাংশ বাড়িভাড়া বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলাম। প্রজ্ঞাপনে যা স্পষ্ট করে উল্লেখ থাকবে এমনটা বলেছি। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে কোনো কথাই বলেননি। তাই আমরা মনে করি এই বৈঠক আই ওয়াশ।
আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আমরা শহীদ মিনারে যাব। সেখানে অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। মার্চ ফর যমুনা কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে, দুপুরে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকটি শুরু হয়। এতে আন্দোলনকারী ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’-এর সদস্যসচিব দেলোয়ার হোসেন আজিজিসহ ১৬ শিক্ষক নেতা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষক নেতাদের মধ্যে আরও ছিলেন- অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন, অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন, মো. জসিম উদ্দিন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. আবু তালেব সোহাগ, নুরুল আমিন হেলালী, আবুল বাশার, তোফায়েল সরকার, শান্ত ইসলাম হাবিবুল্লাহ রাজু, মিজানুর রহমান, মিজানুর রহমান মাহিন, আব্দুল হাই সিদ্দিকী, রবিউল ইসলাম, মো. রকিবুল হাসান রাসেল প্রমুখ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষক-কর্মচারীরা বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়ানোর দাবি করেছেন। মন্ত্রণালয় বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। তবে একবারে ২০ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ধাপে ধাপে এটি বাড়ানো হবে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে শিক্ষক নেতাদের ডাকা হয়েছে।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম তিন হাজার টাকা) বাড়ি ভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা গত রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। এতে সারাদেশ থেকে আসা বিপুল শিক্ষক-কর্মচারী অংশ নেন। কিন্তু সেখানে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তারা। লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান থেকে পানি ছুড়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরদিন সোমবার থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলন করেন তারা।
পরদিন মঙ্গলবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সচিবালয়ের অভিমুখে মিছিল করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। হাইকোর্টের মাজারসংলগ্ন গেটে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। সেখানেই রাত পর্যন্ত শিক্ষকদের অবস্থান করতে দেখা যায়।
গতকাল বুধবার বেলা ১১টা থেকে আবারও শহীদ মিনারে জড়ো হন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। দাবি মেনে না নিলে শাহবাগ মোড় অবরোধের কথা জানায় তারা। এরপর শাহবাগ অবরোধ করেন তারা। বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচি থেকে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে বলেও জানান শিক্ষকরা।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এমএস
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com