ঢাকা      সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১ কার্তিক ১৪৩২
শিরোনাম

জাপানে চালক নিয়োগে বাংলাদেশে ড্রাইভিং স্কুল স্থাপন করবেন জাপানি উদ্যোক্তা

IMG
26 October 2025, 10:25 PM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: জাপানে কর্মসংস্থানের জন্য বিপুল সংখ্যক প্রশিক্ষিত চালক নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ্যে জাপানের বিশিষ্ট উদ্যোক্তা ও রাজনীতিবিদ মিকি ওয়াতানাবে বাংলাদেশে একটি ড্রাইভিং স্কুল স্থাপনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। ওয়াতানাবে জাপানের শিল্প প্রতিষ্ঠান ওয়াতামি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি শনিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ ঘোষণা দেন।

ওয়াতানাবে বলেন, ‘আমরা এখন ড্রাইভিং স্কুলটি স্থাপন করতে ১২ হাজার বর্গমিটারের একটি জায়গা খুঁজছি।’ জাপানে দক্ষ চালকের চাহিদা অনেক বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সে ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ জনশক্তির উৎস হতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ঢাকার উপকণ্ঠে উপযুক্ত জমি চিহ্নিত করার নির্দেশ দেন।

অধ্যাপক ইউনূসের গত মে মাসে জাপান সফরের ধারাবাহিকতায় এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। ওই সফরে জাপানি উদ্যোক্তারা আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ কর্মী নিয়োগের বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। ওয়াতানাবে বৈঠকে জানান, তিনি ইতোমধ্যে নরসিংদীর মনোহরদীতে একটি ভাষা প্রশিক্ষণ একাডেমি স্থাপন করেছেন, যেখানে অন্তত তিন হাজার বাংলাদেশিকে প্রশিক্ষণ প্রদান ও নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে নির্মাণ ও কৃষি খাতে কাজের জন্য ৫২ জন কর্মী জাপান গেছেন।’ বর্তমানে একাডেমিতে প্রতি ব্যাচে ৪০ জন শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে উল্লেখ করে এটিকে ধীরে ধীরে বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে জাপানি সংস্কৃতি, শিষ্টাচার ও আচরণ শেখানোর ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘শিষ্টাচার ও সংস্কৃতি শেখানো প্রশিক্ষণের অপরিহার্য অংশ হওয়া উচিত। এতে বাংলাদেশিরা জাপানকে ভালোভাবে বুঝতে পারবে এবং দেশটিতে যাওয়ার আগে উপযুক্তভাবে প্রস্তুত হতে পারবে।’

অধ্যাপক ইউনূস ওয়াতামি গ্রুপের প্রধানকে সেবা, নার্সিং, নির্মাণ ও কৃষি খাতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্প্রসারণের আহ্বান জানান, কারণ এসব খাতে দক্ষ কর্মীরা জাপানে ভালো আয় করতে পারেন। ওয়াতানাবে এ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে বলেন, ‘আমরাও এগুলো করতে চাই।’

তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নবগঠিত জাপান সেলের প্রশংসা করেন, যা জাপানি বিনিয়োগকারী ও বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা সহজ করছে। জাপানি কোম্পানিগুলোকে যেন নরসিংদীর মনোহরদী পর্যন্ত যেতে না হয়, সেজন্য তিনি ঢাকা বা আশপাশে আরেকটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা কর্মকর্তাদের অব্যবহৃত কোনো আইটি পার্ক বা উপযুক্ত ভবন চিহ্নিত করতে নির্দেশ দেন, যা স্বল্প ব্যয়ে জাপানি ভাষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রূপান্তর করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘ড্রাইভিং স্কুলের জন্য জমি এবং নতুন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জন্য উপযুক্ত জায়গা খুঁজে বের করতে আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’

প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব সজীব এম খায়রুল ইসলাম জানান, শিগগিরই জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য ঢাকার আশপাশের সম্ভাব্য আইটি পার্কগুলো পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।

অধ্যাপক ইউনূস জাপানি ভাষা দক্ষতা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর আহ্বান জানান। বর্তমানে বছরে মাত্র দু’বার পরীক্ষা হয়, যা ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে যথেষ্ট নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বৈঠকে ওয়াতানাবে এক দশকেরও বেশি আগে গাজীপুরের নারায়ণকূলে প্রতিষ্ঠিত একটি বিদ্যালয়ের কথা স্মরণ করেন, যা অধ্যাপক ইউনূসের দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্বের স্বপ্নে অনুপ্রাণিত হয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে এখন ১,৫০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। এটি একটি অসাধারণ প্রতিষ্ঠান। এখানকার শিক্ষার্থীরা খুব ভালো করছে।’ বৈঠকে এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

এ বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন