ঢাকা      শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
শিরোনাম

অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালীকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করলো বিজিবি

IMG
06 December 2025, 2:34 AM

চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ‘পুশ ইন’ করার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আটক অন্তঃসত্ত্বা নারী সোনালী খাতুন ও তাঁর শিশু সন্তানকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সোনা মসজিদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। তবে সোনালীর স্বামীকে ফেরত নেয়নি ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এর আগে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর এক রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে চার সপ্তাহের মধ্যে সোনালীদের ভারতে ফিরিয়ে নেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্ট।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলা থেকে কাজের সন্ধানে সোনালী ও তাঁর পরিবার দিল্লি গিয়েছিল। গত জুন মাসে বাংলাদেশি সন্দেহে তাদের ধরা হয়। তারপর সীমান্ত দিয়ে জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়। গত ২০ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আলীনগর থেকে সোনালী, তাঁর স্বামী, সন্তানসহ ভারতের ছয় নাগরিককে আটক করে পুলিশ। ওই ছয় ভারতীয় নাগরিক হলেন: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার ধিতোরা গ্রামের দানিশ শেখ (২৮), তাঁর স্ত্রী সোনালী (২৬), তাদের ৮ বছর বয়সী ছেলে এবং সুইটি বিবি (৩৩) ও তার ১৬ ও ৬ বছর বয়সী ছেলে। তাদের মধ্যে সোনালী বিবি অন্তঃসত্ত্বা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজু আহমেদ জানান, ওই ছয়জনের মধ্যে সোনালীর স্বামী দানিস শেখসহ বাকি চারজনকে ফেরত নেয়নি বিএসএফ।

বিজিবির মহানন্দা ব্যাটালিয়নের (৫৯ বিজিবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ আইসিপিতে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে পুশ ইনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুন ও তাঁর ৮ বছরের সন্তানকে সুস্থ ও নিরাপদ অবস্থায় বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন।

হস্তান্তর শেষে মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেন, বিএসএফের এই অমানবিক পুশ ইন কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড এবং দ্বিপক্ষীয় সীমান্ত ব্যবস্থাপনা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। পুশ ইনের এই কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় মানবিক সংকটের সৃষ্টি করছে এবং উভয় দেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।

২০ আগস্ট ওই ছয় ভারতীয়কে আটকের পর দু'টি শিশু ছাড়া বাকি চারজনের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা করে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ১ ডিসেম্বর আদালত ওই চারজনকে জামিন দেন। দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে রাত আটটার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তারা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নয়াগোলা এলাকার বাসিন্দা সোনালীর আত্মীয় ফারুক হোসেনের জিম্মায় তাদের জামিন দেওয়া হয়। তবে জামিনে মুক্তির দেড় ঘণ্টা পর ওই দিনই রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।

ভারতীয় নাগরিক হওয়ার যাবতীয় প্রমাণ সাপেক্ষে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্ট সোনালীদের ফেরত আনার নির্দেশ দেন। তা সত্ত্বেও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তেমন উদ্যোগী হচ্ছিল না। এ পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার দেশটির প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী মানবিক কারণে সোনালীদের দ্রুত ফেরত আনার নির্দেশ দেন। গত বুধবার সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মতির কথা জানান। এরপর শুক্রবার সোনালী বিবি ও তার সন্তানকে ফিরিয়ে নিল ভারত।

ব্রেকিং নিউজ, এই মুহূর্তের খবর, প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর, লেটেস্ট নিউজ এবং গুরুত্বপূর্ণ আপডেট নিউজ পেতে ভিজিট করুন www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন