ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, বর্তমানে একটি কঠিন অবস্থা চলছে। দেশকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র বন্ধে জাতীয় ঐক্য করতে হবে। ক্ষমতা ও স্বার্থের নেশায় থাকলে চলবে না। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেন স্বাধীনতার পর থেকে আপনারা মায়ের কোলের মত আছেন। কিন্তু কেউ কেউ দেশে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য আপনাদের ব্যবহার করছে, আপনারা সতর্ক থাকুন।
পীর সাহেব চরমোনাই ওলামা সম্মেলনে আগত ওলামায়ে কিরাম ও জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামীদিনে ঐক্যবদ্ধ স্বপ্নের স্বদেশ বিনির্মানে একসাথে কাজ করার আহবান জানান।
আজ ২৮ নভেম্বর'২৪ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ঐতিহাসিক চরমোনাইর বার্ষিক মাহফিল স্টেজে আয়োজিত ওলামা ও সুধী সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন পীর সাহেব চরমোনাই।
ওলামা সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ,খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ, বাংলাদেশ ফরায়েজী জামায়াতের আমীর হাজী শরীয়তুল্লাহর উত্তরসূরী বাহাদূরপুরের পীর হাফেজ মাওলানা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান, বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন হাফেজ মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আল ফরিদী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান,জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা হাফিজুর রহমান সিদ্দিক, গণ অধিকার পরিষদ সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, হাফেজ্জি হুজুর রহঃ এর জামাতা ও খলিফা কমলনগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আল্লামা খালিদ সাইফুল্লাহ পীর সাহেব কমল নগর, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, চরমোনাই মাহফিল ১০০ বছর অতিক্রম করেছে। ঐক্যের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবো ইনশাআল্লাহ। আমরা কুরআনী শাসন চাই। এজন্য আমরা সকলে মিলে এক হয়ে কাজ করবো।
খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ বলেন, ঐক্যের কোন বিকল্প নেই, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হবো।
বাংলাদেশ ফরায়েজী জামায়াতের আমীর হাজী শরীয়তুল্লাহর উত্তরসূরী বাহাদূরপুরের পীর হাফেজ মাওলানা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান বলেন, পীর সাহেব চরমোনাই'র ইমামতিতে কাজ করতে আমরা একমত আছি। এজন্য যা যা করার তা করতে রাজি আছি। এদেশের আলেম ওলামা ৮৮ বা ৯৮ এর বন্যার পানিতে ভেসে আসেনি। সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি করছি।
বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন হাফেজ মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আল ফরিদী বলেন, ৫ আগষ্টের গণঅভ্যুত্থান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বড় নেয়ামত। ৯০ভাগ মুসলমানের সংবিধানে মূলনীতি হবে কুফরী মতবাদ এটা মেনে নেয়া যায় না। ইসলাম মানুষের জান-মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা দেয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ৫ আগষ্ট পরিবর্তন হলেও পরাজিতরা ষড়যন্ত্র করছে। তারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে উঠেপড়ে লেগেছে। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত চিন্ময় দাস দেশকে অস্থিতিশীল করতে অপচেষ্টা করছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কেন বিবৃতি দিবে? ভারতীয় মিডিয়াগুলো অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাংলাদেশে ভারতের মিডিয়াকে নিষিদ্ধ করেছে। দেশের পক্ষে ও বিরুদ্ধে কে এটা এখন পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে। আমরা ইসলামী রাজনৈতিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।
গণ অধিকার পরিষদ সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, কোন রাজনৈতিক দলকে প্রাধান্য দিয়ে অন্যদেরকে অবজ্ঞা করা যাবে না। সকল দলের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে সকল কাজ করতে হবে। ছোট খাটো বিরোধের কারণে যাতে আমরা নতুন করে দেশ গড়ার সুযোগ থেকে যাতে বঞ্চিত না হই সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নেতা কর্মীদের শ্লোগান "নেতা নয় নীতির পরিবর্তন চাই" এই শ্লোগানকে বাস্তবায়ন করে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থেকে নতুন কিছু করতে হবে ।
হাফেজ্জি হুজুর রহঃ এর জামাতা ও খলিফা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আল্লামা খালিদ সাইফুল্লাহ পীর সাহেব কমল নগর বলেন, ৩,৪ ও ৫ আগষ্ট ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর শায়েখে চরমোনাই'র ভূমিকায় ফেসিস্ট সরকার পালাতে বাধ্য হয়েছে। তিনি খেলাফত আন্দোলনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে কাছে এনে নির্বাচনে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করতে হবে। অতীতের অভিজ্ঞতায় জামায়াতের সাথে ঐক্য এতো দ্রুত নয় তবে নির্বাচনী ঐক্য হতে পারে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী বলেন, ইসকন নামক সন্ত্রাসী সংগঠন দিয়ে দেশে গৃহযুদ্ধ লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে। চরমোনাই পীর সাহেব ও আল্লামা মামুনুল হক সাহেব একসাথে বসেছি এবং হাতে হাত রেখে একত্রে পথ চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আগামীকাল সকাল ১০টায় মাহফিল স্টেজে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর ছাত্র গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।
আগামী ৩০ নভেম্বর'২৪ শনিবার সকাল ৮.৩০টায় হযরত পীর সাহেব চরমোনাই'র আখেরি বয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী বিশাল এ মাহফিলের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।
মাহফিলে আসা মুসল্লীদের মধ্যে গতকাল দুইজন বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। উভয়ের জানাযা শেষে মাহফিল হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/জেএস
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com