সকালে খালি পেটে ফল খেলে কী হয়?
লাইফস্টাইল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: কথায় আছে, খালি পেটে জল আর ভরা পেটে ফল খাওয়ার মতো উপকারিতা দ্বিতীয়টি নেই। কিন্তু ভরা পেটে ফল খাওয়া যায় আর খালি পেটে খেতে নেই, এই তথ্য সঠিক নয়। আপনি কি জানেন, ফল খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে। তবে এর আগে পানি খেতে হবে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সকালে খালি পেটে ফল খেলে আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেম সজাগ হয়ে যাবে। কেননা রাতের অনেকটা সময় পেট খালি থাকে। তাই প্রথমে পানি খেয়ে আদ্রতার পরিমাণ বাড়িয়ে এরপর ফল খেতে পারেন। এতে দিনের শুরুতে শরীর চাঙ্গা হবে আপনার। এ ছাড়া চা-কফির প্রয়োজন হবে না। সকালে খালি পেটে খেতে পারেন- আপেল, কমলালেবু, পেঁপে, কলা ইত্যাদি।
সকালে খালি পেটে ফল খাওয়া যাবে কি না, এ নিয়ে বিভিন্ন মতভেদ আছে। এ ছাড়া সকালে খালি পেটে ফল খেলে বিভিন্ন সমস্যা হয় বলেও শোনা যায়। এর সত্যতা কতটুকু? চলুন জেনে নিই সকালের নাস্তায় ফল খেলে কী হতে পারে-
ওজন কমে:
অতিরিক্ত ওজন যাদের মাথাব্যথার কারণ, তারা নিয়মিত সকালের নাস্তায় ফল খাওয়া শুরু করুন। এতে উপকার মিলবে। ফলে থাকা একাধিক পুষ্টিকর উপাদান শরীরে মজুত টক্সিক উপাদানগুলো বের করে দিয়ে ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। তেমনই অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে বারে বারে খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে:
ঘুম থেকে ওঠার পর ব্লাড সেল এবং ব্রেন সেলকে পুনরায় অ্যাকটিভ করতে শরীরের প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি বা শর্করার প্রয়োজন পড়ে। এ কারণে সকালে খালি পেটে ফল খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এতে শরীরের চিনির চাহিদা পূরণ হয়। এ ছাড়া প্রাকৃতিক সুগার, লো গ্লাইকেমিক হওয়ার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কাও কমে। এর সঙ্গে ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
হার্ট ভালো থাকে:
দীর্ঘদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে চাইলে সকালের নাস্তায় অবশ্যই ফল রাখতে হবে। কারণ নিয়মিত খালি পেটে ফল খেলে শরীরে উপকারি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও মিনারেলের মাত্রা শুরু করে। যা কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে আনার পাশাপাশি ব্লাড প্রেসারকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
পুষ্টির ভাণ্ডার:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালের নাস্তার ১৫ মিনিট আগে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল খেলে খাবারে উপস্থিত পুষ্টিকর উপাদানগুলো শরীরে বেশি মাত্রায় শোষিত হয়।
শরীরের বিষ বের করে দেয়:
সকালের প্রথম অর্ধে শরীর নিজের অন্দরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানগুলি বের করে দেয়ার প্রক্রিয়া চালায়। তাই সকালে ফল খেলে শরীর থেকে বেশি মাত্রায় বিষাক্ত উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে।
অ্যাসিড দূর করে:
সকালে খালি পেটে ফল খেলে অ্যাসিডিটি হবে- এটি ভুল ধারণা। এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। কেননা, একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত ফল খেলে অ্যাসিড নয়, শরীরে অ্যাসিড এবং অ্যালকেলাইনের ভারসাম্য ঠিক হতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অ্যাসিডিটি এবং গ্য়াস-অম্বলে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
পেটের রোগ কমায়:
ফলে থাকা ফাইবার শরীরে প্রবেশ করার পর হজমে সহায়ক পাচকরসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে একদিকে যেমন হজম ক্ষমতা বাড়ে, তেমনই কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের মতো সমস্যার সমাধান হয়।
রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ে:
বেশিরভাগ ফলে উপস্থিত ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অন্যান্য উপকারী উপাদান দেহের ভিতরের রোগ প্রতিরোধক শক্তি বাড়িয়ে দেয়।
শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়ে:
ফলের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা রক্তে মিশ্রিত হওয়ার পর শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে মস্তিষ্কও সজাগ হয়ে ওঠে। ফলে সার্বিকভাবে শরীরের সচলতা বৃদ্ধি পায়।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এমএস
