ঢাকা      রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
শিরোনাম

এখনো নিখোঁজ ইঞ্জিন মাস্টার

IMG
18 January 2024, 11:20 AM

মানিকগঞ্জ, বাংলাদেশ গ্লোবাল: মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের অদূরে নোঙর করে রাখা রজনীগন্ধা ফেরিডুবির ঘটনায় ইঞ্জিনের দ্বিতীয় মাস্টার হুমায়ুন কবির এখনো নিখোঁজ। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। এদিকে, ডুবে যাওয়া ফেরিটি উদ্ধারে নারায়ণগঞ্জ থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ আনা হচ্ছে।

হুমায়ুন কবিরের বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায়। তিনি বিআইডব্লিউটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের আরিচা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি। ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের সহকারী পরিচালক আনোয়ারুল হক ঘটনাস্থল থেকে আজ সকালে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁদের ডুবুরি দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। সকাল ১০টার দিকে ফেরির নিখোঁজ ইঞ্জিন মাস্টারকে উদ্ধারে কাজ শুরু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে ফেরির অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে।

এদিকে, ঘন কুয়াশায় গতকাল বুধবার দিবাগত রাত একটা থেকে আজ সকাল পর্যন্ত পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে সাত ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। আজ সকাল আটটার দিকে কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হয়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা বলেন, উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা দিয়ে ডুবে যাওয়া ফেরিটি উদ্ধার করা সম্ভব নয়। এ কারণে নারায়ণগঞ্জ থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ঘটনাস্থলে আনা হচ্ছে। আজ দুপুরের মধ্যে উদ্ধারকারী জাহাজটি দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি), মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত ১২টার পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি রজনীগন্ধা। ফেরিতে ৯টি মালবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ছিল। রাত দেড়টার দিকে ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটের অদূরে পদ্মা নদীতে আটকে পড়ে ফেরিটি। এ সময় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। গতকাল সকাল আটটার দিকে ফেরিটি ডুবে যেতে থাকে। এ সময় যানবাহনের চালক, সহকারী ও ফেরিতে কর্মরত লোকজন দ্রুত নদীতে ঝাঁপ দেন। পরে তাঁদের কেউ কেউ সাঁতরে নদীর তীরে ওঠেন। এ ছাড়া স্থানীয় লোকজন ট্রলার নিয়ে বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসেন। এর একপর্যায়ে সকাল সাড়ে আটটার দিকে ফেরিটি পুরোপুরি ডুবে যায়।

খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ, নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। দুপুর ১২টার দিকে বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ঘটনাস্থলে আসে। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে এই জাহাজ দিয়ে ফেরিটি উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়।

গতকাল বিকেল চারটার দিকে দুর্ঘটনাস্থলের উজান থেকে হামজা দিয়ে ডুবে যাওয়া মালবাহী একটি কাভার্ড ভ্যান ও একটি ট্রাক উদ্ধার করেন বিআইডব্লিউটিএর লোকজন। পরে গাড়িটিকে রেকার দিয়ে টেনে পাটুরিয়ার ট্রাক টার্মিনালে নিয়ে রাখা হয়।

নৌ পুলিশের ফরিদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ফেরিটি দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া ঘাটে আসার পথে ডুবোচরে ধাক্কা লাগে। এতে ফেরির তলা ফুটো হয়ে গেলে পানি ঢুকতে থাকে। কুয়াশায় পথ দেখতে না পেয়ে পাটুরিয়া ঘাটের ২০০ থেকে ২৫০ গজ অদূরে রজনীগন্ধা ফেরিটি নোঙর করে। এরপর ধীরে ধীরে পানি ঢুকে সকাল ৮টার দিকে ৯টি ট্রাকসহ ফেরিটি ডুবে যায়। এ পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ফেরি থেকে ২০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ফেরির দ্বিতীয় ইঞ্জিন মাস্টার হুমায়ুন এখনো নিখোঁজ।

অবশ্য বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ জানিয়েছেন, নোঙর করে থাকা ফেরি রজনীগন্ধাকে বালুবাহী বাল্কহেড ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এতে ফেরিটি ডুবে যায়। তবে ঘন কুয়াশার কারণে ধাক্কা দেওয়া বাল্কহেডটি শনাক্ত করা যায়নি।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন