স্পোর্টস ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: চেলসিকে দিয়ে শুরু। এরপর ছিল আর্সেনাল, অ্যাস্টন ভিলা, লাইপজিগ, রিয়াল মাদ্রিদের মতো শক্ত সব প্রতিপক্ষ। আর ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটি। যাদের কাছে গত এক দশকে বারবার লিগ শিরোপা হারাতে হয়েছে অলরেডদের। নতুন কোচ আর্নে স্লটের অধীনে দুর্দান্ত শুরুর পর অক্টোবর-নভেম্বরের এই ১০ ম্যাচ ছিল স্লটের নিজেকে প্রমাণের সময়।
সামাজিক যোগাযোগাধ্যম থেকে ব্রিটিশ মিডিয়া– সবখানেই বলা হয়েছিল এই ১০ ম্যাচই লিভারপুলের জন্য ‘ডেথ রান।’ মৃত্যুসম এই চ্যালেঞ্জ পার করতে পারলেই আর্নে স্লটের শুরুর জাদুকে নেহাত ভাগ্য বলে উড়িয়ে দেয়া চলবে না। শর্তটা ছিল এমনই। সেই চ্যালেঞ্জে নিজেদের প্রমাণ করেছে লিভারপুল। হারেনি কোনো ম্যাচেই। আর শেষটায় সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়েছে ২-০ গোলের ব্যবধানে।
ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে দুর্দান্ত এক পারফর্ম উপহার দিয়েছে অলরেডরা। মোহাম্মদ সালাহ-কোডি গাকপো গোল পেয়েছেন। তবে ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয়ার কাজ করেছেন সবাই মিলেই। ডিফেন্সে যেমন আর্লিং হালান্ডকে সুযোগই দেননি ভার্জিল ভ্যাক ডাইক। তেমনি রায়ান গ্রাভেনবার্খ, অ্যালেক্সিস ম্যাকঅ্যালিস্টার আর দোমিনিক সবোস্লাইরা নিশ্চিত করেছেন লিভারপুলের দাপুটে পারফরম্যান্স।
অন্যদিকে খারাপ সময়ের মধ্যে ঘুরপাক খাওয়া ম্যানসিটি লিগে টানা চারটি ম্যাচ হারল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে দলটি জয়হীন টানা সাত ম্যাচে, এর মধ্যে ছয়টিতেই পরাজিত তারা। শীর্ষস্থান থেকে ১১ পয়েন্ট পিছিয়ে পড়ল গত চার মৌসুমের চ্যাম্পিয়নরা। পাঁচ নম্বরে নেমে যাওয়া ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট ২৩। ১৩ ম্যাচে ১১ জয় ও এক ড্রয়ে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিভারপুল। ২৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আর্সেনাল।
একাদশ মিনিটেই গোল পেয়ে যেতে পারতো লিভারপুল। তবে সেই যাত্রায় ভাগ্য সহায় হয় সিটির। সবোস্লাইয়ের কর্নারে ভার্জিল ফন ডাইকের হেড বাধা পায় পোস্টে। পরের মিনিটেই অবশ্য গোল পেয়ে যায় তারা। ডান দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে বক্সে ঢুকে দূরের পোস্টে দারুণ বল বাড়া্ন সালাহ, চোখের পলকে ছুটে গিয়ে এক টোকায় বল জালে পাঠান গাকপো।
প্রথম ৪৫ মিনিটে লিভারপুল যেখানে গোলের জন্য ১০টি শট নিয়ে চারটি লক্ষ্যে রাখতে পারে, সেখানে সিটি এই সময়ে একটি শট নিতে পারলেও সেটা লক্ষ্যে ছিল না। বিরতির পর সিটির খেলার ধার কিছুটা বাড়ে। যদিও আধিপত্য ছিল সেই লিভারপুলেরই। ৫৫ মিনিটে ওয়ান-অন-ওয়ানে সিটি গোলরক্ষককে পরাস্ত করে সালাহর নেয়া শট চলে যায় গোলবারের ওপর দিয়ে।
৭৪তম মিনিটে বক্সে দারুণ পজিশনে বল পেয়েও গোলরক্ষক বরাবর শট নেন হাকপো। ৭৭তম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় সিটি। একা বক্সে ঢুকে পড়া লুইস দিয়াসকে ছুটে এসে ফাউল করেন গোলরক্ষক স্টেফান ওর্টেগা। দারুণ শটে দলকে জয় এনে দেন এই মিশরীয় স্ট্রাইকার।
গোল করেই গিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। একই ম্যাচে সালাহর গোল ও অ্যাসিস্ট পাওয়ার ৩৬তম ঘটনা এটি। প্রিমিয়ার লিগে একই ম্যাচে গোল-অ্যাসিস্টের ঘটনায় এখন শীর্ষে সালাহ। তার সঙ্গে এই রেকর্ডে অবশ্য ভাগ আছে ইংলিশ কিংবদন্তি ওয়েইন রুনির। লিগে এই নিয়ে সবশেষ ছয় ম্যাচেই জালের দেখা পেলেন সালাহ। আসরে তার গোল হলো ১১টি।
৮৩তম মিনিটে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার সুযোগ পান কেভিন ডে ব্রুইন। কিন্তু একরাশ হতাশা উপহার দেন তিনি। প্রতিপক্ষের দুর্বল শট বাধা পায় ডে ব্রুইনের পায়ে, বল ধরে বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলরক্ষকের গায়ে মারেন বেলজিয়ান মিডফিল্ডার। সিটি এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। হারের ক্ষত নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এমএন
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com